সমাজ কাকে বলে । সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি। কেন প্রয়োজন

সমাজ কাকে বলে (What is society in Bengali) তো আলোচনার টপিক দেখে হয়তো বা আপনি বুঝতে পেরেছেন।

সমাজ কাকে বলে । সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি। কেন প্রয়োজন
সমাজ কাকে বলে

আজকে আমি কোন বিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত বলবো। তো আমরা সামাজিক জীব। আর সে কারণে জীবন ধারণের জন্য আমাদের প্রত্যেক টা মানুষ কে সমাজে বসবাস করতে হয়।

কিন্তু আপনি কি জানেন, সমাজ কাকে বলে? আপনি কি জানেন সমাজের বৈশিষ্ট্য কি কি? এছাড়াও সমাজের উপাদান গুলো কি কি (society meaning in Bangla).

তো আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জানে না। আর সেই অজানা মানুষ গুলো কে জানিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

আপনি আরোও দেখুন…

যেখান থেকে আপনি জানতে পারবেন সমাজ কাকে বলে। এর পাশাপাশি সমাজ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তো আর সময় নষ্ট না করে চলুন সরাসরি মূল আলোচনা তে ফিরে যাওয়া যাক।

সমাজ কি বা সমাজ কাকে বলে ?

সমাজ কাকে বলে যদি আমি এই বিষয়টি কে খুব সহজভাবে বলার চেষ্টা করি। তাহলে বলব যে, যখন কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে একাধিক মানুষ তাদের নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য।

যখন একজন আরেক জন এর উপর নির্ভরশীল থাকবে। এবং জীবন কে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিধি-নিষেধ মেনে চলবে।

তখন তা একটি সমাজের রূপ নেয়ম অর্থাৎ নিজের স্বার্থ উদ্দেশ্যের জন্য যখন মানুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল থাকবে। এবং সেই মানুষদের একটা জনগোষ্ঠী গড়ে উঠবে, তখন তাকে বলা হবে সমাজ।

আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের সমাজবিদ্যার সংজ্ঞা দেখেন। তাহলে আপনি যদি জানতে পারবেন, যে সমাজ হলো এক ধরনের বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থান।

যেখানে বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি বিরাজমান থাকবে। বিভিন্ন প্রকার কথোপকথন নিয়ম কানুন থাকবে। তখন সেই সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠী কে একত্রে বলা হবে সমাজ।

কারণ একটি সমাজের মধ্যে বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষ থাকতে পারে। বিভিন্ন চিন্তা ধারার মানুষ একত্রে বসবাস করতে পারে।

এবং সমাজে বসবাস করা এই মানুষ গুলো একে অপরের সাথে পরিচিত এবং সম্পর্ক রাখা বিষয় টি বাঞ্চনীয়।

তবে একটা কথা জেনে রাখুন, উপরে আমরা সমাজ কাকে বলে এবং সমাজের সংজ্ঞা জেনেছি। তবে আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন।

কারণ সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে আমরা যে সকল সমাজে বসবাস করি। সেই সমাজের কোন ধরনের সংজ্ঞা হয় না।

কেননা অনেক সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে সমাজ হল এক ধরনের বিমূর্তি সত্তা।

কেননা আমরা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে একটি সমাজ এর সমষ্টিকে নিজের চোখে দেখতে পারলেও। কিভাবে একটি সমাজ গঠন হয়, তা কিন্তু নিজের চোখে দেখতে পাই না।

সমাজ এর বৈশিষ্ট্য কি কি ?

আমরা এতক্ষণ থেকে জানতে পারলাম সমাজ কাকে বলে। এর পাশাপাশি আমি আপনাকে সমাজের সঠিক সংজ্ঞা গুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তো আপনি কি জানেন, একটি সমাজের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যদি আপনি না জেনে থাকেন, তাহলে শুনে রাখুন.. আমরা যে সকল সমাজে বসবাস করি।

সেই সমাজের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে। আর সেই বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয়। তাই চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি।

  1. একটি সমাজ সর্বদাই মানুষের দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে।
  2. বর্তমান পৃথিবীতে যে সকল মানুষ বসবাস করে। সেই সকল মানুষদের পুরোপুরি ভাবে সমাজের উপর নির্ভরশীল।
  3. একটি সমাজ এর মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের স্তর থাকে। আর এই প্রত্যেক টা স্তর একে অপরের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ একটি ছাড়া আরেক টি অচল।
  4. সমাজের বিভিন্ন প্রকারের লক্ষ্য রয়েছে। আর সেই লক্ষ্য গুলো শ্রম বিভাজন এবং দায়িত্ব বিভাজনের মাধ্যমে সম্পাদন করা হয়।
  5. সমাজের মধ্যে যে সকল মানুষ বসবাস করে। সেই মানুষ গুলোর মধ্যে একতা বিরাজমান থাকে। এর পাশাপাশি একে অপরের প্রতি সহযোগিতা করার মনোভাব থাকে।
  6. সমাজ সর্বদাই চলমান তবে একটি সমাজ কখনোই তার নিয়মের বহির্ভূত হয় না। বরং সে সর্বদাই তার নির্ধারিত নিয়মের মধ্যে চলমান থাকে।
  7. সমাজের মধ্যে বসবাস করা মানুষেরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও সেখানে স্বার্থ বিদ্যমান থাকে।
  8. একটি সমাজ সাদৃশ্য এবং বৈ সাদৃশ্য নিয়ে গঠিত হয়। তবে এটা এখানে যা কিছুই স্বার্থ থাকুক না কেন, তা সবই সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
  9. যে সমাজের মধ্যে সাদৃশ্য এবং বৈ সাদৃশ্য বিদ্যমান নেই সেই সমাজ ক্রমাগত ভাবে ভঙ্গুর হতে থাকে।
  10. একটি সমাজের মধ্যে যে সকল সামাজিক সম্পর্ক থাকে। তা কখনোই ছুঁয়ে দেখা সম্ভব নয় বরং তা শুধুমাত্র চোখ দিয়ে দেখা যায়।
  11. সহযোগিতা এবং দ্বন্দ্ব এই দুটো হল একটি সমাজের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ বিষয়। যেখানে সহযোগিতার পাশাপাশি দ্বন্দ্ব বিদ্যমান থাকে।

সমাজের বিভিন্ন প্রকারের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে আমি চেষ্টা করেছি গুরুত্বপূর্ণ সব বৈশিষ্ট্য গুলো কে উপরে তুলে ধরার।

যাতে করে আপনি সহজেই বুঝতে পারেন যে, একটি সমাজের বৈশিষ্ট্য কি কি হতে পারে।

এবং আমার দীর্ঘ বিশ্বাস যে, এই আলোচনা থেকে আপনি সমাজের বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে গেছেন।

তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, সমাজের উপাদান গুলো কি কি।

সমাজ এর উপাদান গুলো কি কি?

আমরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি সমাজ কাকে বলে। এর পাশাপাশি আমি আপনাকে উল্লেখ যোগ্য কিছু সমাজের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

তো এবার আমি আপনাকে সমাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব। সেটি হল, সমাজ এর উপাদান গুলো কি কি। অর্থাৎ আমরা যে সকল সমাজে বসবাস করি।

সেই সকল সমাজ বিভিন্ন প্রকার এর উপাদান রয়েছে। আর এবার আমি আপনাকে ধাপে ধাপে সেই সকল সমাজের উপাদান গুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব।

এর পাশাপাশি উক্ত উপাদান গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

সাদৃশ্যতা ও অনুরূপতা

আমরা মানুষ হিসেবে যে সকল সমাজে বসবাস করি। সেই সকল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো, সাদৃশ্যতা ও অনুরূপতা।

কারণ আমরা বেশ ভালো করেই জানি যে, একটি সমাজের মধ্যে বসবাস করা কোন জনগোষ্ঠীর।

সাধারণ বংশ, পারিবারিক সুবিধা, এছাড়াও উপজাতির সংখ্যা এই সবকিছু হলো একটি সমাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে শুধুমাত্র এই অনুরূপতা এর মাধ্যমেই সমাজ গঠিত নয়।

বরং আপনি একটি সমাজের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারের সাদৃশ্য লক্ষ্য করতে পারবেন। কেননা এই যাবতীয় বিষয় গুলো নিয়ে একটি সমাজ গঠিত হয় এবং মানুষ সেই সমাজে বসবাস করতে পারে।

আর সে কারণেই বিখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী ম্যাকাইভার বলেছেন। ঘনিষ্ঠতা ও আত্মতা এবং গভীরতার উপর নির্ভর করে বোঝাপড়ার মাধ্যমে।

আর যখন এই বোঝাপড়া সম্পন্ন হয় তখন অনুরূপতা সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে তৈরি হয়ে থাকে। কারণ সমাজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানুষ বসবাস করে।

হয়তোবা কেউ নারী, কেউ পুরুষ, কেউ শিশু আবার কেউ বালক। তো এ কারণেই একটি সমাজের মধ্যে অনুরূপতা এর অবস্থান লক্ষণীয়।

মূলত সে কারণেই বলা হয় যে, সমাজের অন্যান্য উপাদান গুলোর মধ্যে। সাদৃশ্যতা এবং অনুরূপতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বৈ-সাদৃশ্য ও পার্থক্য

আমরা মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে যে সকল সমাজে বসবাস করি। সেই সমাজের বিভিন্ন উপাদান গুলোর মধ্যে বৈসাদৃশ্য ও পার্থক্য বিদ্যমান থাকে।

যেমন ধরুন, আমাদের সমাজের মধ্যে যেমন নারী বসবাস করে। ঠিক তেমনি ভাবে এদের পাশাপাশি পুরুষ বসবাস করে।

এখন একটি নারীর জৈবিক চাহিদার সাথে একজন পুরুষের জৈবিক চাহিদার পার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক একটি বিষয়। আবার আপনি যদি একটু ভালো ভাবে লক্ষ্য করে দেখেন।

তাহলে আপনি স্পষ্ট দেখতে পারবেন যে একটি সমাজের মধ্যে আর্থিক অবকাঠামো এর মাধ্যমেও পার্থক্যের সূচনা হয়ম কেননা এই আর্থিক অব কাঠামো একটি মানুষের জীবিকা ও কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করে থাকে।

কারন আমরা বেশ ভালো করে জানি যে, আমাদের সমাজে বসবাস করা প্রত্যেক টা মানুষের চাহিদা, প্রকৃতি, ব্যবহার ও প্রতিভা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

এবং সে কারণে একটি মানুষের সাথে অন্য একটি মানুষের চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টি ভঙ্গি সব সময় আলাদা হয়।

আর এই ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্য এবং ভিন্ন ধর্মীয় মানুষের কারণে একটি সমাজ সর্বদাই গতিশীল অবস্থায় থাকে। তবে সমাজে বসবাস করা প্রতিটা মানুষের বৈশিষ্ট্য দৃষ্টিভঙ্গি যদি একই হতো।

তাহলে কিন্তু সমাজ একটা সময় গিয়ে থমকে দাঁড়াতো। এবং একে অপরের উপর নির্ভরশীলতা, সহযোগিতা ইত্যাদি ক্রমাগত ভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যেত।

পারস্পরিক সচেতনতা

কোন একটি সমাজের অন্যান্য উপাদান গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সচেতনতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মূলত অনুরূপতা ও সাদৃশ্যতার মাধ্যমে সমাজে বসবাস করা মানুষদের।

একে অপরের প্রতি পারস্পরিক সচেতনতার সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি মানুষ একজন আরেক জনের সাথে বৈষম্য গুলো খুঁজে বের করতে পারে।

আর আপনার একটা কথা বেশ ভালো করে জেনে রাখা উচিত। সেটি হল, সাদৃশ্যতা এবং বৈসাদৃশ্যতা এই দুটো উপাদানের মাধ্যমে একটি সমাজ কোনো কথা হবে উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।

কারণ এই উপাদান গুলোর মাধ্যমে সমাজে বসবাস করা বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন মানুষের সাথে পার্থক্য গুলো খুঁজে পায়। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে পারস্পরিক সচেতনতা সৃষ্টি হয়।

আপনার জন্য আরোও লেখা…

এবং সে জন্যই সমাজে বসবাস করা মানুষরা সামাজিক নিয়ম গুলোর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। যার ফলে সমাজের মধ্যে থাকা মানুষদের পারস্পরিক সম্পর্ক, মানসিক সম্পর্কের গভীরতা সৃষ্টি হয়।

এবং এভাবেই সমাজে বসবাস করা মানুষদের মধ্যে একতা তৈরি হয়। আর সে কারণে বলা হয় যে, একটি সমাজের মধ্যে থাকা পারস্পরিক সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

পরস্পর নির্ভরতা

একটি সমাজ ঠিক ততক্ষণ চলমান থাকবে। যতক্ষণ সেই সমাজে বসবাস করা মানুষেরা একে অপরের উপর নির্ভরশীল হবে। এবং এটি হলো একটি সমাজ গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

যেটি ছাড়া কোনো ভাবেই একটি সমাজ সম্পূর্ণ ভাবে গঠিত হতে পারে না। কারণ আপনি একটা বিষয়ে বেশ ভাল করেই বুঝতে পারবেন।

সেটি হলো, মানুষ কখনোই একক ভাবে নিজের সকল বাসনা গুলো পূরণ করতে পারেনা। সেজন্য অবশ্যই সমাজে বসবাস করা অন্যান্য মানুষের উপর নির্ভর করতে হবে।

আর যখন মানুষ এভাবে সমাজে বসবাস করে অন্যান্য মানুষের উপর নির্ভরশীল হয়। তখন সেই সমাজের মধ্যে অন্তর্গত থাকা মানুষদের পরস্পর নির্ভরতা তৈরি হয়।

এছাড়াও একজন মানুষের একা বসবাস করাও অসম্ভব। কেননা একটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অবশ্যই অন্যান্য মানুষের প্রয়োজন হবে।

এবং কোন না কোনো ভাবে একটি মানুষ সমাজ ও বসবাস করা অন্যান্য মানুষের উপর নির্ভরশীল থাকবে।

যেমন ধরুন, একটি সমাজে শুধুমাত্র পুরুষ বসবাস করলে সেই সমাজ টি কোনভাবেই আর গতিশীল থাকতে পারবে না। সেজন্য অবশ্যই পুরুষের পাশাপাশি মহিলাদের অবস্থান থাকতে হবে।

তাহলে সেই সমাজ চলমান থাকবে। অন্যথায় সেই সমাজে যদি এমন পারস্পরিক নির্ভরতা না থাকে। তাহলে সেই সমাজ ধীরে ধীরে থমকে দাঁড়াবে।

পারস্পরিক সহযোগিতা

একটি সমাজ কে গতিশীল রাখার জন্য সেই সমাজে বসবাস করা মানুষদের একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব থাকতে হবে।

এবং অন্যান্য উপাদান গুলোর মত এটি হলো একটি সমাজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপদান। যাকে ছাড়া একটি সমাজ কোন ভাবেই গতিশীল থাকতে পারবে না।

কারণ সমাজে বসবাস করা মানুষেরা যদি একে অপরের প্রতি সহযোগিতা না করে। তাহলে সেই সমাজ কে কখনোই একটি সামাজিক সমাজ সুস্থ সমাজ বলা যাবে না।

বরং যখন সেই সমাজের মধ্যে থাকা মানুষেরা একে অপরের বিপদে, অসুস্থতায় সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়াবে। ঠিক তখনই সেই সমাজ টি গতিশীল থাকবে।

কারণ আপনি পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুঁজে পাবেন না। যারা সর্বদাই সুখী এবং আরাম প্রিয় জীবন কাটাতে পারে। আর জীবনে বেঁচে থাকতে হলে সুখের পাশাপাশি দুঃখ অনুভব করতে হয়

আর এই সময় যখন আপনার পারিপার্শ্বিক মানুষেরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে। তখন কিন্তু আপনার তাদের প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা জন্ম নিবে।

আপনার মধ্যে সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা আসবে। তবে সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, এই পারস্পরিক সহযোগিতা তখনই সংঘটিত হয়।

যখন সেখানে স্বার্থ জড়িত থাকে। অর্থাৎ স্বার্থের কারণেই মানুষ এই পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য হাত বাড়ায়।

দ্বন্দ্ব অথবা বিবাদ

আমরা মানুষ হিসেবে যে সকল সমাজে বসবাস করি। সে সকল সমাজের বিভিন্ন উপাদান রয়েছে। তবে তার মধ্যে অপরিহার্য একটি উপাদান হলো, দ্বন্দ্ব বা বিবাদ।

আর আপনি যখন বিভিন্ন ধরনের সমাজ বিজ্ঞানীদের সংজ্ঞা পড়বেন। তখন সেখান থেকে জানতে পারবেন যে, একটি সমাজ কখনোই দ্বন্দ্ব অথবা বিবাদ ছাড়া চলমান থাকতে পারে না।

অর্থাৎ এটি হলো সবচেয়ে অবিচ্ছেদ একটি অংশ। যখন একটি সমাজের মধ্যে ভিন্ন মত ভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং বিভিন্ন পার্থকের মানুষ বসবাস করবে।

তখন তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার পাশাপাশি দ্বন্দ্ব থাকবে এটা স্বাভাবিক বিষয়।

কারণ সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, একটি সমাজের মধ্যে থাকা মানুষেরা যদি নিজেদের পার্থক্য, নিজেদের মধ্যে থাকা বৈষম্য গুলো বুঝতে না পারে।

তাহলে কিন্তু তাদের মধ্যে সম্প্রীতি তৈরি হবে না। আর যদি একই সমাজের মধ্যে থাকা মানুষদের মধ্যে সম্প্রীতি বিদ্যমান না থাকে।

তাহলে কিন্তু সেই সমাজ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে। তাই সেই সমাজ এর মধ্যে অন্যান্য উপাদান গুলো থাকার কথা পাশাপাশি। অবশ্যই দ্বন্দ্ব বা বিবাদ থাকা বাঞ্ছনীয়।

এতে করে একে অপরের প্রতি পার্থক্য ও বৈষম্য গুলো ফুটে উঠে।

সমাজের প্রয়োজন কেন ?

আমরা এতক্ষণ থেকে জানতে পেরেছি, সমাজ কাকে বলে। সেই সাথে আমি আপনাকে সমাজের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য জানিয়ে দিয়েছি।

এবং আমরা যে সকল সমাজে বসবাস করি। সেই সমাজের প্রধান উপাদান গুলো কি কি তা নিয়ে ধাপে ধাপে আলোচনা করেছি।

তো এখন যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় যে, বলুন তো সমাজের প্রয়োজন কেন। তাহলে কি আপনি সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন?

হয়তোবা আপনার কাছে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর থাকবে না। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, সমাজের প্রয়োজন হয় কেন।

সামাজিক সমর্থন : কোন একটি সমাজের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষ সংঘটিত হয়ে বৃহৎ একটি গোষ্ঠীতে পরিণত করা। আর সে কারণে সমাজে বসবাস করা প্রত্যেক টা মানুষ একে অপরকে সমর্থন করবে।

আর যখন একটি মানুষ কঠিন পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়। ঠিক সেই সময়ে তারা সমাজের গুরুত্ব বুঝতে পারে। এবং এই কঠিন পরিস্থিতি গুলোতে সমাজে বসবাস করা প্রত্যেক টা মানুষ একে অপর কে সমর্থন করে।

সামাজিক গোষ্ঠী গঠন: বিষয়টা অবাক করার মত হলেও সত্য যে, একটি সমাজ মূলত নেটওয়ার্কের মতো কাজ করে থাকে।

কারণ সমাজে বসবাস করা প্রত্যেক টা মানুষের মধ্যে কোনো না কোনো সম্পর্ক বিরাজমান থাকে। আর এর ফলে একটি সমাজ সামাজিক বন্ধনের দিকে অনেক শক্তিশালী হয়।

এর পাশাপাশি সেই সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোকেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে পারে।

সংস্কৃতির সংগঠন: কোন একটি সমাজের জন্য সংস্কৃতি সংগঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

কারণ আমরা বেশ ভালো করে জানি যে, প্রত্যেক টা সমাজ তার নিজস্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী মেনে চলে। এবং সেই সংস্কৃতি অনুযায়ী অন্যান্য কাজ গুলো সম্পন্ন হয়।

যেমন, ভাষা, সাহিত্য ধর্ম, শিল্প ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের সংস্কৃতি প্রভাবিত হয়।

ব্যবস্থাপনা: সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলোর মধ্যে ব্যবস্থাপনা হলো অন্যতম।

যার মাধ্যমে একটি সমাজে বসবাস করা মানুষদের জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, যানবাহন ইত্যাদি মাধ্যমে একটি সমাজ গতিশীল হয়।

এছাড়াও সমাজে বসবাস করা মানুষের যে সকল মৌলিক চাহিদা রয়েছে। তা কিন্তু এই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পূরণ হয়ে থাকে।

সাধারণ লক্ষ্য: সমাজে বসবাস করা প্রত্যেক টা মানুষ একে অপরের প্রতি কল্যাণ করার মানসিকতা থাকা উচিত।

যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন মুহূর্তে সমাজে বাস করা অন্যান্য মানুষেরা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে। তাদের সহযোগিতা করা উচিত।

যদি এমনটা হয় তাহলেই সমাজ চলমান থাকবে নতুবা সেই সমাজ থমকে দাঁড়াবে।

আপনি আরোও পড়তে পারেন…

উপরে আপনি বেশ কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে পারছেন। তো যারা আসলে জানতে চান, সমাজ এর প্রয়োজন কেন হয়।

আশা করি, তারা এই আলোচনা থেকে উক্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানতে পেরেছেন। কেননা সমাজ কি কি কারণে প্রয়োজন হয়।

তার প্রত্যেক টা বিষয় কে আমি উপরে উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। যেখান থেকে আপনি উক্ত বিষয় টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে পারবেন।

সমাজ নিয়ে আমাদের শেষ কথা

আজকে আমি সমাজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আলোচনা করেছি। যেমন, সবার শুরুতেই আমি আপনাদের বলেছি যে, সমাজ কাকে বলে।

সেই সাথে সমাজের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমি আপনাকে ধাপে ধাপে জানিয়ে দিয়েছি।

এছাড়াও সমাজের উপাদান গুলো কি কি এবং কেন সমাজের প্রয়োজন হয় তার প্রত্যেক টা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

আশা করি, আজকের আলোচিত আলোচনা থেকে আপনি সমাজের সকল বিষয় সঠিক তথ্য জানতে পেরেছেন।

আর এই ধরনের তথ্য গুলো সহজ ভাষায় জানতে হলে, আমাদের সাথে থাকবেন। এর পাশাপাশি যদি আপনি নতুন কোনো বিষয়ে জানতে চান।

তাহলে সেটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এছাড়াও আমাদের এই লেখা সম্পর্কে যদি আপনার কোন ধরনের মতামত থাকে।

কিংবা কোন ধরনের অভিযোগ থাকে। তাহলে তা কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ! ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top