অপটিক্যাল ফাইবার কি ? এবং এটা কিভাবে কাজ করে

অপটিক্যাল ফাইবার কি ? – এমন প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনে জেগে থাকে। কারন বর্তমান প্রযুক্তি কে উন্নিতকরন এর পেছনে অপটিক্যাল ফাইবার এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।

আমরা আজকের দিনে যেমন কম সময় এর মধ্যে নিজের তথ্য গুলো কে আদান প্রদান করছি ৷ তার পেছনে Optical Fiber এর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।

অপটিক্যাল ফাইবার কি ?
অপটিক্যাল ফাইবার কি

আচ্ছা, আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, আমরা যে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে নিজের তথ্য গুলো দ্রুততার সাথে আদান প্রদান করছি। সেটা কিভাবে সম্ভব হচ্ছে ?

আমরা তো নিজের ঘরে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করি। তাহলে কিভাবে ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে আমরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি?

এমনটা কখনই ভাবেন নি, তাইনা? – তাহলে জেনে রাখুন… আজকের এই উন্নত বিশ্বের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা বস্তুটির নাম হলো, অপটিক্যাল ফাইবার

মূলত আজকের আর্টিকেল এর মূল টপিক হলো, Optical Fiber নিয়ে। আজকে আপনি জানতে পারবেন, অপটিক্যাল ফাইবার কি, এর ইতিহাস কি, আমরা অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করার ফলে কি কি সুবিধা ভোগ করতে পারছি।

এবং এই বস্তুটি ব্যবহার করার ফলে আমাদের কি কি সমস্যা বা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। এইসব কিছু বিষয় নিয়ে আজকে বিষদভাবে আলোচনা করবো।

তাই যদি আপনার মনে Optical Fiber সম্পর্কে একটু জানার আগ্রহ থাকে। তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল হবে।

তাই চেস্টা করবেন হাতে একটু সময় নিয়ে আজকের পুরো আর্টিকেলটি পড়ার। তাহলে আপনি আজ থেকে অপটিক্যাল ফাইবার নিয়ে অনেক অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন। 

অপটিক্যাল ফাইবার কি? (What is optical fibre) 

সবার আগে আপনাকে জেনে নিতে হবে যে, অপটিক্যাল ফাইবার কাকে বলে। তাহলে পরবর্তী আলোচনা গুলো আপনার বুঝতে সুবিধা হবে। তো চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

যদি আমি আমরা বিষয়টি কে সহজভাবে প্রকাশ করি৷ তাহলে বলবো, Optical Fiber হলো বিশেষ ধরনের টেকনোলজি। যার মাধ্যমে আমরা দ্রুততার সাথে যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজেদের তথ্য কে আদান প্রদান করতে পারি। 

তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো, আমরা যে এতো দ্রুততার সাথে নিজেদের তথ্যকে স্থানান্তর করি৷ সেটা কিন্তুু আলোর মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে।

আপনি আরো পড়ুন…

কি অবাক হলেন, তাইনা?- হুমমম! আপনি ঠিকই দেখেছেন। এই সবকিছুই সংঘটিত হয় মূলত আলোর রুপে ৷

আর এই কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য ব্যবহার করা হয় এক ধরনের সরু তন্তু। যাকে বলা হয়ে থাকে ফাইবার অপটিক (Fiber Optic). আর এ ফাইবার অপটিক এর মাধ্যমে মূলত আলো চলাচল করে থাকে।

সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হলো, এই অপটিক্যাল ফাইবার বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য বহন করে নিয়ে যেতে পারে। এটি মাটির নিচেও তথ্য বহন করে নিয়ে যেতে পারে।

আবার এই ফাইবার গুলো সমুদ্রের তলদেশ দিয়েও তথ্যকে বহন করে নিয়ে যেতে পারে। 

অপটিক্যাল ফাইবার এর ইতিহাস (History of Optical  Fiber) 

যেহুতু আপনি অপটিক্যাল ফাইবার কি – সে সম্পর্কে জেনে গেছেন ৷ সেহুতু আপনার এই অবাক করা টেকনোলজি এর ইতিহাস জেনে নেয়াটা অতি আবশ্যক।

তো চলুন এবার আমরা Optical Fiber এর ইতিহাস সম্পর্কে ছোট্ট করে জেনে নেবো।

আমরা সবাই জানি যে, উনিশ দশক বা তার আগে প্রযুক্তি এতোটা উন্নত ছিলোনা যতোটা আমরা আজকের দিনে দেখতে পাই। সেজন্য উক্ত সময়ে যদি কেউ কোনো তথ্যকে অন্য কোনো দুরবর্তী মানুষের নিকট পাঠানোর চেস্টা করতো।

তাহলে সেই কাজের জন্য প্রচুর পরিমানে সময় ব্যয় করতে হতো।

আর তার অনেক আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা এই সমস্যা কে নিরসনের জন্য অপ্রান চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছিলো। যেন এই কাজটি করার জন্য মানুষকে এতোটা কষ্ট করতে না হয়।

তো একটা সময়ে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার কিছু সমাধান খুজে পায়। তাদের মাথায় একটি অভাবনীয় আইডিয়া চলে আসে ৷ সেই আইডিয়া টি হলো, আলোর মাধ্যমে কোনে তথ্যকে স্থান্তরিত করা।

আর তাদের এই আইডিয়াটি একটা সময় সফল হয়। কিন্তুু সমস্যা বাঁধে নতুন একটি জায়গাতে।

সেটি হলো, এই কাজে আলো ব্যবহার করবে। কিন্তুু এই আলোকে কিভাবে বদ্ধ করবে, তা নিয়ে বেশ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

এবং পরবর্তী সময়ে তারা ভাবতে থাকে যে, কিভাবে এই আলো কে একটি পাইপের মাধ্যমে চলাচল করানো যায়।

এরপর লরেঞ্চ কার্টিন নামক এক বিজ্ঞানী ছিলেন। যিনি সর্বপ্রথম কাচের মাধ্যমে আলোকে চলাচল করার আইডিয়া বের করেন৷ কিন্তুু সেখানেও বেশ সমস্যা বেঁধে যায়।

সেটি হলো, কাচের মাধ্যমে আলো চলাচল করার সময় নির্দিষ্ট স্খানে পৌঁছানোর পূর্বেই সম্পূর্ন আলো শেষ হয়ে যায়।

তবে এই সব গুলো সমস্যার সমাধান নিয়ে আসেন আমেরিকান এক গবেষক। যিনি সর্বপ্রথম বিশুদ্ধ কাঁচের তন্তুর মাধ্যমে আলো চলাচল করার আইডিয়া বের করেন।

এবং পরবর্তী সময়ে কাও নামকনসেই আমেরিকান বিজ্ঞানী ২০০৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। আর সেই আইডিয়ার সুবিধা আমরা এখনও ভোগ করে চলেছি। 

অপটিক্যাল ফাইবার কিভাবে কাজ করে? 

উপর এর আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, অপটিক্যাল ফাইবার মূলত বিশুদ্ধ কাঁচের সরু তন্তুর মাধ্যমে আলো কে চলাচল করিয়ে থাকে।

কিন্তুু এই Optical Fiber আসলে কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে জেনে নেয়াটাও কিন্তুু অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

যদি আমরা খুব ছোট্ট আকারে বলি, তাহলে বলবো এটি মূলত ” Total Internal Reflection” – নীতির উপর ভিওি করে কাজ করে থাকে। সচারচর এখানে আলোক রশ্মি গুলো কে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়।

যেন খুব দ্রুততার সাথে যে কোনো পরিমান ডাটা (Data) কে বহন করতে পারে।

আর সম্পূর্ন ক্যাবলে আলোর স্থানান্তর একটি পয়েন্ট থেকে অন্য একটি পয়েন্ট পর্যন্ত অবিরাম চলতে থাকে। আর যেহুতু ফাইবার এর তার গুলো সমান হয়না।

সেহুতু ফাইবারের ভেতরে থাকা আলোক রশ্মি গুলো বারংবার বাউন্স (Bounch) খায় এবং পর্যায়ক্রমে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

আর আমরা যে তথ্যকে গুলোকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করি। সেগুলো কিন্তুু বিভিন্ন মাধ্যমে সংঘটিত হয়ে থাকে। যেমন, এক প্রান্ত থেকে যখন কোনো তথ্য পাঠানো হয়।

তখন ফাইবার যেন এই তথ্য গুলোকে গ্রহন করতে পারে৷ সেজন্য সেখানে একটি ট্রান্সমিটার লাগানো থাকে।

এবং পরবর্তী সেই ট্রান্সমিটার থেকে আলোক রশ্মি এর সাহায্য সেই তথ্য গুলো কে অন্য কোনো প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই মূলত আপনার পাঠানো তথ্য গুলো অপর প্রান্তে পৌঁছে যায়। 

অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার?

এবার আমরা জানবো যে, অপটিক্যাল ফাইবার কত প্রকার। কেননা, আপনি যদি এর শ্রেনীবিন্যাস সম্পর্কে বুঝতে না পারেন। তাহলে আপনার অনেক বিষয় সম্পর্কে অজানাই থেকে যাবে।

তো যদি আমরা অপটিক্যাল ফাইবার কে বিভক্ত করি৷ তাহলে আপনি মোট ৩ টি ভাগে Optical Fibre কে ভাগ করতে পারবেন। যেমন,

  • ব্যবহার হওয়া ম্যাটেরিয়াল 
  • প্রতিসরাঙ্ক এবং
  • আলোর প্রচারের পদ্ধতি 

তবে অপটিক্যাল ফাইবার কে উপরের তিনটি ভাগে ভাগ করা হলেও, বিভক্ত করা এই ভাগ গুলোকে আবার আলাদা আলাদা ভাবে ভাগ করা সম্ভব। এবার সেগুলো নিয়ে একটু আলোচনা করবো।

যদি আমরা আলোর প্রতিসরাঙ্ক এর উপর ভিওি করি। তাহলে আপনি আরও দুইভাবে আলোর প্রতিসরাঙ্ক কে ভাগ করতে পারবেন। যেমন,

Uniform Index Fiver (ইউনিফর্ম ইনডেক্স ফাইবার)

 মূলত যার প্রতিসরাঙ্ক এর কোনো রুপ পরিবর্তন হয়না। এবং যার প্রতিসরাঙ্ক সর্বদাই একই রকম থাকে। মূলত তাকে বলা হয়, Uniform Index Fiber.

Graded Index Fiber (গ্রেডেড ইনডেক্স ফাইবার)

এইক্ষেএে আপনি ফাইবার এর প্রতিসরাঙ্কে কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করতে পারবেন। এখানে Fiber এর দিক থেকে প্রতিসরাঙ্ক এর দুরত্ব যতো বেশি হবে। এর মান ঠিক ততোটাই কমতে থাকবে।

অপরদিকে আপনি যদি ব্যবহার করা ম্যাটেরিয়াল এর দিক থেকে বিবেচনা করেন। তাহলে আপনি আরও দুইটি ভাগে ভাগ করতে পারবেন। যেমন,

Plastic Optical Fiber (প্লাস্টিক অপটিক্যাল ফাইবার) 

তো যখন অপটিক্যাল ফাইবার এর কোনো তন্তু হিসেবে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়। তখন সেই তন্তু কে বলা হয়, Plastic Optical Fiber. 

Glass Optical Fiber (গ্লাস অপটিক্যাল ফাইবার)

যখন কোনো অপটিক্যাল ফাইবার এর কোর কোর হিসেবে গ্লাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তখন তাকে বলা হবে, Glass Optical Fiber .

তবে এখানেই শেষ নয়, বরং আপনি অপটিক্যাল ফাইবার কে আরও দুইটি ভাগে ভাগ করতে পারবেন। এবার সেই দুইটি ভাগ কে নিয়ে ছোট্ট করে আলোচনা করবো।

Single Mode Fiber (সিঙ্গেল মোড ফাইবার)

যখন শুধুমাএ এক প্রকার এর আলোক রশ্মি ব্যবহার করা হবে। তখন তাকে বলা হবে Single Mode Fiber. এই ধরন এর অপটিক্যাল ফাইবার এর সুবিধা রয়েছে।

যেমন, আপনি চাইলে এর মাধ্যমে অনেক দুরবর্তী প্রান্ত থেকে নিজের প্রয়োজনীয় ডাটা গুলো কে স্থানান্তর করতে পারবেন। তবে এই সুবিধার পাশাপাশি এখানে  Transmission Power তুলনামূলক ভাবে অনেক কম থাকে।

Multimode Fiber (মাল্টি মোড ফাইবার) 

সিঙ্গেল মোড ফাইবার এর উল্টো হলো Multimode Fiber. কারন এখানে আপনি বিভিন্ন ধরন এর আলোক উৎস দেখতে পারবেন। যেখানে মূলত LED লাইট এর সামন্জস্যতা রয়েছে।

অপরিদকে এখানে Transmission Power অনেক বেশি থাকলেও, এর মাধ্যমে কোনো দুরবর্তী স্থানে তথ্য (Data) স্থানান্তর করতে পারবেন না। 

আপনি আরো দেখুন… 

অপটিক্যাল ফাইবার এর কিছু সুবিধা

যদি আপনার মনে প্রশ্ন জেগে থাকে যে, কেন বর্তমান সময়ে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা উচিত। তাহলে এই অংশটি আপনার জন্য খুবই হেল্পফুল হবে।

কারন এখন আমরা Optical Fibre এর বিশেষ কিছু সুবিধা সম্পর্কে জানবো।

তো যদি আপনি স্পেসিফিক ভাবে অপটিক্যাল ফাইবার এর সুবিধা সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আপনি এমন অনেক ধরন এর সুবিধা দেখতে পারবেন। যেমন, 

No.1: অনেক দ্রুত গতি সম্পন্ন

আমরা যেটুকু কল্পনা করি, তার থেকে বেশি গতি সম্পন্ন হলো এই অপটিক্যাল Fiber. এই তার গুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে ইনস্ট্যানলি একটি ডেটাকে এক স্থান থেকে অন্য একটি স্থানে স্থানান্তরিত করা সম্ভব।

যা আপনি কল্পনা করতে পারবেন না।

এর মূল কারন হলো, এই তার গুলো ইলেকট্রিক তার এর তুলনায় ৬০ থেকে ১০০% বেশি গতিসম্পন্ন হয়ে থাকে। যার দরুন, কোনো ডেটা কে স্থানান্তরিত করার জন্য খুব বেশি সময় এর প্রয়োজন পড়ে না।

এছাড়াও অন্যান্য তারের তুলনায় ফাইবার তার গুলো অধিক পরিমানে ডেটা স্থানান্তর করতে পারে। যা আমাদের জন্য নিশ্চই একটা ভালো দিক। 

No.2: আকারে অনেক ছোট 

অপটিক্যাল ফাইবার এর একটি বিশেষ গুন আছে। সেটি হলো এরা আকারে অনেক ছোট হয়ে থাকে। যা আমি উপরের আলোচনা তে বলেছি যে, Optical Fibre এর সাইজ মূলত চুলের মতো সরু হয়ে থাকে।

যার ফলে এই ফাইবার গুলো ওজন এর দিক থেকেও তুলনামুলক কম ওজনের হয়ে থাকে। আর এজন্য এই ফাইবার গুলোকে এক স্থান থেকে অন্য কোনো স্থানে নিয়ে যাওয়াটাও অনেক সহজ হয়ে থাকে।

তাই আপনি চাইলে একসাথে অনেক গুলো Fiber কে সহজেই স্থানান্তরিত করতে পারবেন। 

No.3: কোনো পাওয়ার লস হয় না

সাধারনত আমরা দেখি যে, ইলেকট্রিক ওয়্যার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে Power Loss হয়ে থাকে। কিন্তুু এইদিক থেকে বিবেচনা করলে আপনি অপটিক্যাল ফাইবার এ তেমন কোনো পাওয়ার লস দেখতে পারবেন না।

এককথায় কোনো লস হয় না বললেই চলে।

এছাড়াও এই ফাইবার গুলো তে কোনো প্রকার শর্ট সার্কিট হওয়ার কোনো প্রকার সম্ভাবনা নেই ৷ কারন যেগুলো ফাইবার ওয়্যার। সেগুলো মূলত সিলিকা গ্লাস এবং প্লাস্টিক এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে।

অপরদিকে এই ওয়্যার গুলো সিকিউরিটির দিক থেকেও অনেক মজবুত। 

অপটিক্যাল ফাইবার এর কিছু অসুবিধা 

মুদ্রার যেমন এপিঠ ওপিঠ থাকে, ঠিক তেমনি এই Optical Fiber এরও সুবিধার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক যে, এই ক্যাবল গুলোর কি কি অসুবিধা রয়েছে। 

No.1: ফাইবার অপটিক ক্যাবল এর দাম

অন্যান্য ক্যাবল এর তুলনায় ফাইবার ক্যাবল গুলোর সুবিধা বেশি হওয়ার কারনে। ফাইবার অপটিক ক্যাবল এর দাম কিন্তুু আকাশচুম্বী হয়ে থাকে।

এছাড়াও এই তার গুলোতে সংযোগ প্রদান করার জন্য যেসব বাড়তি সামগ্রী এর প্রয়োজন হয় ৷ সেগুলোর দাম কিন্তুু অধিক হয়ে থাকে। 

No.2: মেরামত বা সংরক্ষন করা অনেক ঝামেলা

অপটিক্যাল ফাইবার এর ক্যাবল গুলো ব্যবহার করার সময় যদি তারের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা যায়। তখন বেশ বিপাকে পড়তে হয়।

প্রথমত এই ক্যাবল গুলোর ত্রুটি কোথায় তা খুজে বের করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়।

এছাড়াও যখন আপনি এই ক্যাবল গুলো মেরামত করতে যাবেন। তখনও আপনাকে বেশ ভালো পরিমান টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন পড়বে। 

No.3: প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অধিক মূল্য 

যেহুতু অপটিক্যাল ফাইবার এর সুবিধা অনেক বেশি। সেহুতু এই ক্যাবল গুলো সেটআপ থেকে শুরু করে যেসব প্রয়োজনীয় সামগ্রীর প্রয়োজন হবে। সেই সামগ্রী গুলোর দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক গুন বেশি হয়ে থাকে।

আর এই সামগ্রী গুলো দামে অনেক বেশি হওয়ার পরও আপনাকে বেশি দাম দিয়ে সেগুলো কে কিনে নিতে হবে। কারন এগুলো ছাড়া Installation Process সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না।

এছাড়াও এই ক্যাবল গুলোর দেখাশোনা করা এবং মেরামত বা সংরক্ষন এর জন্য একজন দক্ষ টেকনিশিয়ান এর প্রয়োজন পড়বে। এবং সেই টেকনিশিয়ান কেও কাজের বিনিময়ে বেশ ভালো পরিমান টাকা প্রদান করতে হবে। 

স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবার এর পার্থক্য

এই প্রশ্নটি একটা সময় আমার মনেও ঘুরপাক খেত। আমি নিজেও এর উওরটা খোজার চেস্টা করতাম যে, স্যাটেলাইট ও অপটিক্যাল ফাইবার এর পার্থক্য কি? তো বিভিন্ন সোর্স থেকে আমি এই পার্থক্যটা জানতে পারি।

এবার সেটি নিয়ে আপনার সাথে আলোচনা করবো।

দেখুন, আপনি স্যাটেলাইট বলেন কিংবা অপটিক্যাল ফাইবার। এই দুটোই কিন্তুু দুরবর্তী প্রান্তের তথ্য (Data) আদান প্রদান এর কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে পৃথিবীর বাইরে অর্থ্যাৎ সৌরজগতে এমন অনেক স্যাটেলাইট আছে।

যাদের সাহায্য মহাকাশ বিজ্ঞানীরা সৌরজগত সম্পর্কে অনেকে অজানা তথ্য সম্পর্কে জেনে থাকে।

তবে এই দুটোই দুরবর্তী তথ্য আদান প্রদান করার কাজে ব্যবহার করা হলেও কিন্তুু এই দুটোর মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যেমন,

💡স্যাটেলাইটঃ স্যাটেলাইট পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে আনুমানিক ৩৬,০০০ কিলো মিটার দুরে অবস্থান করে। এবং সেই দুরবর্তী স্খান থেকে তথ্য প্রদান করে থাকে।

💡অপটিক্যাল ফাইবারঃ অপরদিকে অপটিক্যাল ফাইবার থাকে সমুদ্রের তলদেশে। এবং সমুদ্রের তলদেশ থেকে বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান করে থাকে।

আমরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি যে, অপটিক্যাল ফাইবার মূলত আলোক রশ্মি কে কাজে লাগিয়ে তথ্য স্থানান্তর করে থাকে।

কিন্তুু আপনি যদি স্যাটেলাইট এর দিকে লক্ষ্য করেন। তাহলে দেখবেন যে, স্যাটেলাইট তথ্য স্থানান্তর করার জন্য মাইক্রোওয়েব তরঙ্গ ব্যবহার করে থাকে।

অপটিক্যাল ফাইবার সমুদ্রের তলদেশে থাকলেও এর ডাটা স্থানান্তর এর গতি স্যাটেলাইট এর থেকে অনেক গুন বেশি হয়ে থাকে ৷

আপনার জন্য আরো লেখা…

অপরদিকে স্যাটেলাইট এর তথ্য স্থানান্তর এর গতি অপটিক্যাল ফাইবার এর তুলনায় অনেক গুন কম হয়ে থাকে।

স্যাটেলাইট থেকে তথ্য স্থানান্তর করার জন্য কোনো প্রকার ক্যাবল বা তার এর প্রয়োজন হয়না। কিন্তুু অপটিক্যাল ফাইবার এর ক্ষেএে তার ছাড়া কল্পনা করাই অসম্ভব।

যদি আমরা সিগন্যাল এর দিকে নজর দেই ৷ তাহলে বলবো স্যাটেলাইট এর সিগন্যালে কিন্তুু নানা রকম বিঘ্নতা দেখা যায়। কিন্তুু অপটিক্যাল ফাইবার এ তেমন কোনো বিঘ্নতা দেখা যায় না। 

আমাদের শেষকথা 

যদি আপনি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন। তাহলে আমার বিশ্বাস যে আপনার অপটিক্যাল ফাইবার নিয়ে আর কোনো অজানা বিষয় থাকবে না।

তবে এরপরও যদি আপনার মনে Optical Fiber নিয়ে আরও কিছু জানার থাকে। তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি যথাসম্ভব চেস্টা করবো আপনার অজানা বিষয় কে জানিয়ে দেয়ার।

আমাদের সাথে থাকুন, নতুন কিছু জানার জন্য। ধন্যবাদ

18 thoughts on “অপটিক্যাল ফাইবার কি ? এবং এটা কিভাবে কাজ করে”

  1. নাসির উদ্দিন

    অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার লেখা থেকে ভাই্‌

  2. রূপসী রায়

    অজানা অনেক কিছুই জানতে পারলাম যা আগে জানতাম না। আর লেখায় অনেক তথ্য কথা আছে সব মিলিয়ে ধন্যবাদ।

    1. আপনাকেও ধন্যবাদ পজেটিভ মতামতের জন্য । আমরা এমন আরো ভালো কন্টেন্ট ব্লগে প্রকাশ করেছি চাইলে সেগুলা আইটি ইনফরমেশন ক্যাটাগরি থেকে দেখে আসতে পারেন।

  3. মলি আক্তার

    ডিশের বা ওয়াইফাই এর তার গুলা কি অপটিক্যাল ফাইবার ?

  4. Iam tech blogger

    ভাল লাগল আপনার আর্টিকেল থেকে তথ্য গুলা সাজানো …

  5. টেক ব্লগ নিয়ে আমার দেখা আরেকটি ব্লগ সাইট নোট করে রাখলাম ধন্যবাদ।

  6. ধন্যবাদ বাংলা ভাষায় এত সুন্দরভাবে লেখার দ্বারা বোঝানোর জন্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top