ট্রেড লাইসেন্স কি? কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়?

ট্রেড লাইসেন্স কিঃ ট্রেড লাইসেন্সের ব্যবহার প্রথমে শুরু হয় ১৯৮৩। ট্রেড লাইসেন্স সকল ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের আবেদনের পর দেওয়া হয়ে থাকে।

বলা যায়, ব্যবসার অত্যান্ত্য গুরুত্বপূন একটি ডকুমেন্ট হলো Trade License (ট্রেড লাইসেন্স)।

একটি ব্যবসা করলে অবশ্যই আপনার জানতে হবে ট্রেড লাইসেন্স কি, কিভাবে করতে হয়, কেন করবেন কোথায় করে, রেজিস্ট্রেশন কিভাবে করে।

ট্রেড লাইসেন্স কি
ট্রেড লাইসেন্স

কি কি প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র লাগে ট্রেড লাইসেন্স করতে। আমাদের এই ছোট্ট আর্টিকেলর প্রচেষ্টা আশা করি ট্রেড লাইসেন্স সম্পর্কে আপনাদের সাহায্য করবে।

আমাদের বাংলাদেশে এখনো অনেক ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা রয়েছে যারা কোন ধরনের ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের বড় বড় ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

তবে এ সকল উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা যখন কোন বড় ব্যবসায়ী জটিলতায় পড়ে যাবেন তখন ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আইনি খুব একটা বেশি সাহায্য পাবেন না।

সকল ধরনের ব্যবসা বৈধ করার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে অন্যথায় অবৈধ ব্যবসা বলে গণ্য হবে আইনের কাছে।

কেননা ট্রেড লাইসেন্স এর অর্থ হচ্ছে অনুমতি নিয়ে ব্যবসা করা অর্থাৎ সরকার কর্তৃপক্ষ আপনাকে ব্যবসা করার জন্য অনুমতি প্রদান করেছে।

তাহলে চলুন জেনে নেই ট্রেড লাইসেন্সর সকল প্রয়োজনীয় তথ্য-

ট্রেড লাইসেন্স মানে কি – ট্রেড লাইসেন্স কি

ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া বৈধভাবে ব্যবসা করা যায় না। আপনি যদি ছোটো খাটো ব্যবসা করতে চান, পান দোকান, টি স্টল, বা স্বাধীন ছোট পেশা যেমন রাজমিস্ত্রি, কাঠ মিস্ত্রি, কার্পেন্টার, পাইপ ফিডার যেগুলোর জন্য অফিস প্রয়োজন হয়না সেক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হবেনা।

তবে আপনার যদি ট্রেড লাইসেন্স না থাকে তাহলে আপনি বড়ো কোনো কোম্পানীর কাজ পাবেন না।

তাছাড়া নৈতিক ভাবেও লাইসেন্স ছাড়া পেশা বা ব্যবসা পরিচালনা করা ঠিক নয়। বলতে গেলে সব ব্যবসা ও সাধীন পেশার জন্য ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়।

আমাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড যেমন ভোটদান ছাড়াও নানা কাজে লাগে তেমনি ট্রেড লাইসেন্স ব্যবসায়িক নানা কাজে লাগে।

বলতে গেলে প্রতি পদে পদে এর প্রয়োজন হয়। মনে রাখবেন ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব দিয়ে আপনি ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারবেন না।

সেক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনি ব্যবসায়িক হিসাব বা সিডি একাউন্ট বা কারেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবে না। এক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স এর বিকল্প নেই।

সুতারাং এতে করে বোঝা যায় ট্রেড লাইসেন্স এমন একটি ডকুমেন্ট যা আপনার ব্যবসা এবং অন্যান্য কাজকে বৈধভাবে সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন কে বোঝায়।

আরো পড়ুন…

কেন ট্রেড লাইসেন্স করবেন?

অনেক ব্যাংক ছোট-খাটো ব্যবসায় উদ্যোক্তা এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্ন রকম অর্থ লোন প্রদান করে থাকে।

ধরুন আপনার ব্যবসাকে আরো বড় করতে চাচ্ছেন এবং আপনার একটি লোন দরকার কিন্তু আপনি যখন ব্যাংকের কাছে আপনার ব্যবসার জন্য লোন চাইতে গেলেন তারা  ট্রেড লাইসেন্স চাইল।

ট্রেড লাইসেন্স দেখার মূল কারণ হলো ব্যাংক দেখতে চাচ্ছে যে আপনার আসলে কোন ব্যবসা আছে কিনা বা কোন তথ্য প্রদান করেছিল নিচ্ছেন কিনা। কেননা ব্যাংক কখনো অবৈধ কাজের জন্য কোন প্রকার অর্থ অনুদান করে না।

আপনার যদি ট্রেড লাইসেন্স না থাকে তাহলে ব্যাংকের অর্থ লোন থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবেন এছাড়াও নানা রকম আইনি জটিলতা ভেজাল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার ব্যবসার জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স করে নিতে হবে।

এবং লাইসেন্স থাকলে আপনি আরো অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সাহায্য আপনার ব্যবসার জন্য ইজিলি পেয়ে যাবেন।

এটি প্যাসিভ আয়ের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে। যদি আপনি কোন ব্যবসায়িক সম্পত্তির মালিক হন, তবে এটি লাইসেন্স আপনার প্যাসিভ আয়ের একটি চলমান স্ট্রিম তৈরি করার সুযোগ দেয়।

যতক্ষণ লাইসেন্সধারী হিসেবে আপনি ব্যবসা সহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার মালিকানা হারানোর ভয় থাকবে না।

এটি নতুন ব্যবসায়ের সুযোগ তৈরি করে। একজন লাইসেন্সকারী এই ধরণের ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হতে পারেন। কারণ ব্যবসায়ের সুযোগ শুরু করার জন্য তাদের কাছ থেকে কম অর্থের মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদান করা হয়।

তারা সরাসরি লাইসেন্স কিনতে পারে, তারপরেই বৈধ ভাবে ব্যবসা করা শুরু করতে পারে। লাইসেন্সের জন্য সামান্য ফি লাগে। 

এটি উভয় পক্ষের জন্য ঝুঁকি হ্রাস করে। লাইসেন্সিং জড়িত প্রত্যেকের জন্য ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে। লাইসেন্সধারীর দিক থেকে পণ্য বিকাশ, বাজার পরীক্ষা, উত়্পাদন এবং বিতরণে ঝুঁকি কম থাকে।

লাইসেন্সধারীর দৃষ্টিকোণ থেকে, যা দেওয়া হচ্ছে তার বিক্রি ও সেবার ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম রয়েছে। কোনও পক্ষকেই এই ক্ষেত্রগুলিতে মুনাফা অর্জনের জন্য নিজস্ব অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য কি কি লাগে?

একটি ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া বা নিয়মাবলী আছে। ট্রেড লাইসেন্স করার মূল উদ্দেশ্য দেশে ব্যবহৃত সেবা, পণ্য বা পণ্য বিক্রয় সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নির্বাচন করা এবং দেশের প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ী সংস্থা গুলির রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্সিং করা।

ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত তথ্যগুলি প্রয়োজন

  • ব্যবসার নাম এবং ঠিকানা।
  • ব্যবসার ধরণ ও বিবরণ।
  • কর এবং ব্যাংক হিসাবের তথ্য।
  • সরবরাহকারী এবং ক্রেতার তথ্য

ট্রেড লাইসেন্স করার লাভ কি?

এটি বিদেশী বাজারগুলিতে একটি সহজ প্রবেশের ব্যবস্থা করে দেয়। বিশেষ করে যখন বিদেশে কোন বাজারজাতের ব্যবস্থায় প্রবেশ করবেন অথবা কোন ফরেনার কান্ট্রির সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে যাবেন।

তখন অবশ্যই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স দেখা হতে হবে অন্যথায় বিদেশি বাজার থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।

এই পদ্ধতিতে বিদেশী বাজারে প্রবেশ করা অনেক সহজ হয়। তার অর্থ প্রবেশের ক্ষেত্রে শুল্কের বাধাগুলি এড়ানো যায় কারণ কোনও দেশীয় সংস্থা আইপি (intellectual property) ব্যবহার করে তা করতে পারবে না।

এটি স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। লাইসেন্সিং মানুষকে ব্যবসায় করতে উৎসাহী করে। স্ব-কর্মসংস্থানের সমস্ত সুবিধা যেমন তাদের নিজস্ব সময় নির্ধারণের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।

আপনি নিজের আইপিতে কাউকে বিনিয়োগ করার সুবিধা দিতে পারবেন।

লাইসেন্সধারীর দৃষ্টিকোণ থেকে নির্দিষ্ট অঞ্চলে কোনও পণ্য বা পরিষেবার উপর একচেটিয়া বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে স্বল্প বিনিয়োগের হারে তা হয়ে থাকে।

এটি একটি অনন্য বিপণন পদ্ধতির বিকাশের স্বাধীনতা সরবরাহ করে। একজন লাইসেন্সধারী তাদের বাজার গড় লাইসেন্সারের চেয়ে অনেক ভাল জানেন।

সেই জ্ঞানটি এমনভাবে বাজারজাত করতে দেয় যা গড় গ্রাহকের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়।

এমনকি যখন ব্যবস্থাটির নির্দিষ্ট উপাদানগুলি পূর্বপরিকল্পিত হয়, তখনও লাইসেন্সদাতাদের তাদের ব্যবসায়ের পরিচালনায় একটি নির্দিষ্ট স্তরের স্বাধীনতা এবং নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়।

ট্রেড লাইসেন্স না করলে কি ক্ষতি হবে?

প্রথমত ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া যেকোনো ধরনের ব্যবসা কে সরকারিভাবে অবৈধ বলা হয়ে থাকে। কেননা কোন ব্যবসা কে বৈধ করার জন্য অবশ্যই সরকার কর্তৃক অনুমোদন লাইসেন্স নিতে হয়।

আপনার ব্যবসার প্রণীত দ্রব্যগুলো অন্যান্য প্রোডাক্ট গুলো থেকে আলাদা করার জন্য অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স এর ব্যবস্থা করতে হবে।

আপনার ব্যবসার জন্য কোন ধরনের যদি ট্রেড লাইসেন্স না থাকে তাহলে অনেক রকম আইনের সমস্যায় সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

আপনার নিজের ব্যবসার জন্য যদি একটি ট্রেড লাইসেন্স থাকে তাহলে অন্যান্য লোকের ব্যবসার প্রোডাক্ট থেকে আপনার ব্যবসার করাকে আলাদাভাবে মানুষের মাঝে উপস্থাপন করতে পারবেন।

মোটকথা ব্যাংক লোন এবং অন্যান্য আইনি সমস্যার জন্য খুব একটা বেশি সহায়তা পাবেন না যদি না আপনার ট্রেড লাইসেন্স না থাকে ব্যবসার জন্য।

লাইসেন্স এমন একটি ডকুমেন্ট যা মানুষের মাঝে বিশ্বস্থতা তৈরি করে আর লাইসেন্সবিহীন যেকোনো ধরনের ব্যবসা মানুষের কাছে মিথ্যা অথবা বানোয়াট বলে মনে করবে।

পেটেন্ট লাইসেন্সিংয়ের অন্যান্য সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং ডাউনসাইডগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • আপনার উৎপাওদের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, যার ফলে ক্ষতি হবে (আংশিক বা সম্পূর্ণ)
  • আপনার পেটেন্টকে কার্যকরভাবে বাণিজ্যিকীকরণের সক্ষমতার উপর নির্ভরশীল করা হবে।
  • দুর্বল কৌশল বা কার্যকরকরণের ঝুঁকি

ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে?

ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা খরচ হয়? ব্যবসা অনুসারে ট্রেড লাইসেন্স এর খরচ। টেড লাইসেন্স মূলত আপনার ব্যবসার ধরনের ওপর নির্ভর করে ফি ধরা হয়ে থাকে।

তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর অধীনে ৫শ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত রেট আছে।

আপনার যদি লিমিটেড কম্পানি হয়ে থাকে এবং টাকার পরিমাণ যদি ১ লাখের মত হয় তাহলে প্রতি বছর আপনাকে ১৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। আর যদি ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার ব্যবস্যা হয়ে থাকে তাহলে ২০০০ টাকা প্রদান করতে হবে।

ই-কমার্সের যেহেতু কোনো ক্যাটাগরি নেই তাই সফটওয়ার, আইটি বা জেনারেল সাপ্লায়ার হিসেবে লাইসেন্স নিতে হয়।

এজন্য সরকারী ফিস ৮৫০ থেকে ১৭০০ কিন্তু আপনার খরচ পড়বে কম বেশী ৪ হাজার। আর কোন ফার্মের সাহায্য নিলে ৫ হাজার।

এছাড়াও ট্রেডমার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আপনার ইউনিয়ন পরিষদ যদি গ্রাম এলাকা বা উপজেলায় হয়ে থাকে। এবং যদি সিটি কর্পোরেশন হয়ে থাকে তাহলে নির্দিষ্ট সিটি করপোরেশন অফিসে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ই- কমার্স ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য খরচ কেমন

আইটি অথবা সফটওয়ার ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স নেয়া যেতে পারে।এজন্য দাপ্তরিক খরচ ১১শ টাকা থেকে ১৫শ কিন্তু অন্যান্য খরচ যেমন সাইনবোর্ড ট্যাক্স, ফিজিক্যাল ভিজিট ট্যাক্স আর সংশ্লিষ্ট খরচ মিলিয়ে এটা ৪-৫ হাজারে গিয়ে ঠেকে।

কি কি কাজে ট্রেড লাইসেন্স করা লাগে? 

আপনি যে ধরনের ব্যবসা করুন না কেন আপনার প্রয়োজন একটি নাম এবং বৈধতা। যার মাধ্যমে আপনি সঠিক ভাবে  আপনার ব্যবসাকে পরিচালনা করতে পারবেন।

আর আপনার ব্যবসার কোন ধরনের সমস্যা হলে যেন আপনি যেকোন পরিস্থিতে সাহায্য পান তার জন্য এই সুবিধা সরকার আপনাকে দিয়ে থাকে।

আপনি ট্রেড লাইসেন্স বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। যার ফলে আপনার ব্যবসা দ্রুত প্রসারিত হবে এবং আপনার কাজ করতে সহজ হবে।

  • অনেক সময় ব্যবসার শুরুতে বা কোনো পর্যায়ে ব্যাংক লোন দরকার হতে পারে। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আপনি ব্যাংক লোন এর কথাই ভাবতেই পারবেন না।
  • ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যবসা করতে হলে তারা আপনার ট্রেড লাইসেন্স আছে কিনা তা জানতে ও দেখতে চাইবে। কোনো ব্যবসায়িক এসোসিয়েশন এর সদস্য হতে হলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই লাগবে।
  • এছাড়া ভ্যাট ও টিন এর জন্যও ট্রেড লাইসেন্স অপরিহার্য। তাছাড়া আরো অনেক কাজে এর প্রয়োজন পড়ে।

 কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স করবেন?

অনেকে ভাবেন ট্রেড লাইসেন্স করা অনেক কঠিন এবং সময় সাপেক্ষ। তবে বলতে হবে আপনার ব্যবসার জন্য খুব সহজে এবং কম সময়ে আপনি লাইসেন্স করতে পারবেন।

বর্তমানে ই-ট্রেড লাইসেন্স হয়ে কাজ আরও সহজ হয়েছে। আপনি সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, সিটি কর্পোরেশন অথবা পৌরসভায় গিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বানাতে পারেন।

তবে আজকাল অনেক কনসালটেন্সি ফার্ম আছে যারা নির্দিষ্ট সার্ভিস চার্জ এর বিনিময়ে এসব কাজ করে দিয়ে থাকে। নিজে ঝামেলা পোহাতে না চাইলে কোনো ফার্মের হেল্প নিতে পারেন।

বাণিজ্যিক / কর্পোরেট সত্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স:

১. প্রথমেই আপনাকে ফর্ম কালেক্ট করতে হবে। ব্যবসায়ের ধরণের উপর নির্ভর করে, license ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) এর ট্রেড লাইসেন্সের জন্য নাকি অন্য ধরনের ফর্ম নিবেন।

ফর্মের সাথে নাম্বার বা ট্রেড ভাগ অনুযায়ী “এ”, “কে” ইত্যাদি সিস্টেম থাকে।“কে” ফর্মটি অবশ্যই বাণিজ্যিক সংস্থার দ্বারা ব্যবহার করা উচিত।

যদিও দশটি জোনাল অফিস একই “কে” ফর্ম ব্যবহার করে তবে ফর্মটি অবশ্যই তাদের নিজ নিজ জোনাল অফিস থেকে একজন ক্লায়েন্টের দ্বারা গ্রহণ করতে হবে।

অন্যান্য জোনগুলির থেকে এটি আলাদা তার কারণ হল একটি সিল এবং অফিসার আদ্যক্ষর ফর্মটি বিক্রি করে। ফর্মটির জন্য ব্যয় হবে ৩ হাজার টাকা। সম্ভাব্য ব্যবসায়িক উদ্যোগকে উত্সাহিত করার জন্য এটির খরচ কম রাখা হয়েছে।

২. স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সার্টিফিকেশন নিন। আবেদন শেষ হওয়ার পরে অবশ্যই স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের কাছে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করতে হবে।

৩. ডিসিএস জোনাল অফিসে ডকুমেন্টেশন জমা দিতে লাইসেন্স বই সংগ্রহ করুন এবং আবেদন জমা দিন। “কে” ফর্মের জন্য, যে জায়গা থেকে সংস্থাটি পরিচালনা করে, তার জন্য ইজারা প্রাপ্তির রসিদ বা যদি কিনে নেওয়া হয়।

তবে পৌর করের অর্থ প্রদানের রসিদ করা হবে। সহায়ক নথিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: মালিকের পিপি আকারের ছবি ৩ কপি ভাড়ার রসিদ বা চত্বরের মালিকানার প্রমাণ দিতে হয়।

৪. প্রত্যাশিত লাইসেন্স সুপারভাইজার (এলএস) তদন্ত করবে। সরবরাহিত তথ্য যাচাই করতে ফর্মটি জমা দেওয়ার সময় সাধারণত এলএস ব্যবসায়িক সত্তায় যান।

৫. অর্থ প্রদান করুন এবং ট্রেড লাইসেন্সের পূর্বনির্ধারিত সংগ্রহ করুন। এলএস পরিদর্শন শেষ হওয়ার পরে ব্যবসায়টি পূর্ব নির্ধারিত ফি প্রদানের জন্য ডিসিসি অফিসে যেতে হবে এবং তাদের বাণিজ্য লাইসেন্স সংগ্রহ করতে বলা হয়।

ফি নির্ধারণ যে শ্রেণীর অধীনে আবেদন করা হয়েছিল তার উপর নির্ভর করে।

৬. সাইনবোর্ড ফি দিতে হয় বাণিজ্যিক লাইসেন্সিংয়ের জন্য আপনার ব্যবসায়ের নাম পছন্দ করে সাইনবোর্ড চার্জ প্রদান করুন। সমস্ত ধরণের ব্যবসায়ের জন্য কোম্পানির চার্জ বাধ্যতামূলক। একজন ব্যবসায়ীর তার লাইসেন্স ফি প্রদানের ৩০% থাকে।

একটি ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্থার জন্য ট্রেড লাইসেন্স

১.  ফর্মটি অফিস থেকে কালেক্ট করুন। ডিসিসির জোনাল অফিস থেকে সেখানে অপনার সংস্থার অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

২. স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সার্টিফিকেশন নিন। স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারকে অবশ্যই সম্পূর্ণ ফর্মটি যাচাই করতে হবে।

৩. ডকুমেন্টেশনের সহায়তায় আবেদন জমা দিন।

সহায়ক নথিগুলির মধ্যে রয়েছে:

১. আপনার পাসপোর্ট সাইজ ছবির ৩ কপি

২. বিদ্যুৎ বিল বা বাড়ি ভাড়ার কাগজ এর ফটোকপি।

৩. প্রশংসা পত্র

৪. ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পড পেপারে লিখিত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বা নোটারী।

৫. স্থানীয় ফায়ার বিভাগ থেকে ফায়ার লাইসেন্স।

৪. সুপারভাইজার লাইসেন্সিং (এলএস) এর স্বাক্ষর।

সরবরাহিত তথ্য যাচাই করতে ফর্মটি জমা দেওয়ার সময় সাধারণত এলএস ব্যবসায়িক সত্তার সত্যায়িত করা হয়।

৫. ফি পরিশোধ করুন এবং নির্দিষ্ট তারিখে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।

এলএস পরিদর্শন শেষ করার পরে, সংস্থাকে ডিসিসি অফিসে পূর্বনির্ধারিত ফি প্রদান করুন এবং তার ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।

ফি নির্ধারণ যে শ্রেণীর অধীনে আবেদন করা হয়েছিল তার উপর নির্ভর করে।

সাইনবোর্ড ফি

ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহের সময় একটি সাইনবোর্ড ফিও দিতে হবে। সাইনবোর্ডের ফি অবশ্যই সমস্ত ধরণের ব্যবসায়ের জন্য লাইসেন্সের ৩০ শতাংশ চার্জ দিতে হবে।

আরো পড়তে পারেন…

ট্রেড লাইসেন্সের নবায়নযোগ্য

নবায়ন প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সহজ এবং কোনও তদন্তের প্রয়োজন হয় না। ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স অফিস ডিএনসিসি তে যেতে হবে।

প্রক্রিয়া পদক্ষেপ:

১. লাইসেন্স বই পূরণ করুন (এই বইটি ১ বছরের জন্য কার্যকর) মেয়াদ শেষ হওয়া ট্রেড লাইসেন্স চেক করার পরে, অফিসার একটি ডিমান্ড বিলে বিশদগুলি পূরণ করে এবং ব্যবসায়ীকে বইওটি ফেরত দেয়।

ডিমান্ড বিল হ’ল চারটি পৃষ্ঠার বুকলেট যা ব্যাংকের আমানত স্লিপের অনুরূপ। একই তথ্য সমস্ত পৃষ্ঠায় পূরণ করা হয়: একটি পৃষ্ঠা ব্যাঙ্কের জন্য এবং অন্যটি ব্যবসায়ের জন্য।

২.নির্ধারিত ব্যাঙ্কে প্রাপ্য ফি প্রদান করুন। ডিমান্ড বিলের মাধ্যমে মনোনীত ব্যাংক আমানত করুন এবং এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইসেন্সটি পুনর্নবীকরণ করবে।

ট্রেড লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ?

ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়।

  • তিন কপি পার্সপোর্ট সাইজ ছবি, যদি একাধিক অংশীদার থাকেন তাহলে প্রত্যেকের তিন কপি করে ছবি।
  • ভোটার আইডি কার্ড এর কপি, এবং যে বাড়িতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে বা অফিস রয়েছে তার বাড়িওয়ালার সাথে সম্পাদিত চুক্তির ফটোকপি। যে চুক্তিটি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পাদিত হয়েছে।
  • আর বর্তমানে ইউটিলিটি বিলের কপি জমা দিতে হয় অথবা সার্ভিস চার্জ এর রশিদ। 

এই বিভাগে আমি ট্রেড লাইসেন্স নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি হাইলাইট করতে যাচ্ছি —

  • আপনার ট্রেড লাইসেন্স আবেদন ফর্ম ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে সংগ্রহ করতে হবে।
  • আপনি যদি বিদেশি হন তবে আপনার অবশ্যই আপনার পাসপোর্টের একটি কপি দরকার।
  • মালিকানার প্রমাণাদি এবং কর প্রদানের প্রাপ্তি
  • ৩ কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি (প্রস্থ -৪৫ মিমি, উচ্চতা -৫৫ মিমি)
  • আদালতের বিবৃতি, সিটি কর্পোরেশনের বিধি ও বিধি মেনে চলার জন্য মুদ্রণ।
  • অ্যাসোসিয়েশন (এওএ) এবং মেমোরেন্ডাম অ্যাসোসিয়েশন (এমওএ) এর নিবন্ধসমূহ
  • সংস্থার শংসাপত্র
  • অংশীদারিত্বের চুক্তিপত্র
  • বাংলাদেশের বিনিয়োগ বোর্ডের ওয়ার্ক পারমিট শংসাপত্র বা নথি।
  • বিবৃতি
  • ব্যাংক সলভেন্সি অর্থাত্ বিবৃতি
  • টিআইএন শংসাপত্র

ট্রেড লাইসেন্স করতে প্রয়োজনীয় কি লাগে

ট্রেড লাইসেন্স করতে নানা কাগজপত্র লেগে থাকে। যদি আপনার সব কাগজপত্র না থাকে তবে আপনার সেগুলো জোগার করতে হবে।

তবেই আপনি ভালো ভাবে ট্রেড লাইসেন্স করতে পারবেন। সকল কাগজপত্র সত্যায়িত করে দিবেন এবং অবশ্যই কোন কাগজপত্র ভুল দিবেন না।

আবশ্যয় পড়ুন…

কারন আপনার সম্পর্কে ইঙ্কোয়ারি হবে। তাহলে আসুন দেখি কি কি লাগতে পারে-

  • আবেদনপত্র
  • উদ্যোক্তার জাতীয় আইডি কার্ড
  • হোল্ডিং ট্যাক্স পেমেন্ট রসিদ
  • উদ্যোক্তার সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • সিটি কর্পোরেশন এবং পৌর কর্পোরেশনের বিধিবিধান মেনে চলতে অ-বিচারিক স্ট্যাম্পের ঘোষণা
  • স্মারকলিপি এবং সমিতির নিবন্ধগুলির একটি প্রত্যয়িত কপি
  • অন্তর্ভুক্তির শংসাপত্রের একটি অনুলিপি
  • অংশীদারিত্বের চুক্তি
  • কর শনাক্তকরণ নম্বর শংসাপত্র
  • নিবন্ধিত অফিসের ইজারা চুক্তির একটি অনুলিপি
  • বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওয়ার্ক পারমিট
  • ব্যাংক সলভেন্সি বিবৃতি।

অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম

ট্রেড লাইসেন্স বাংলাদেশের প্রতিটি ধরণের ব্যবসায়িক সত্তার জন্য বাধ্যতামূলক। এটি সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় সরকার জারি করে।

প্রতিটি ব্যবসায়িক সত্তা অবশ্যই এটি পরিচালনা করে এমন প্রতিটি স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে।

যদি কোনও ব্যবসায়িক সত্তার ব্যবসায়ের একাধিক স্থান থাকে তবে অবশ্যই প্রতিটি স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।

এটি এক বছরের জন্য জারি করা হয় এবং বার্ষিক নবায়ন করতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স কিছু সরকারী ফি দিতে হয়, যা সাধারণত ব্যবসায়ের ধরণের উপর নির্ভর করে।

অনলাইন ট্রেড লাইসেন্সের জন্য একই প্রক্রিয়ার কাগজপত্রের স্ক্যান কপি লাগে। আপনি আরও বিস্তারিত জানতে ই-ট্রেড লাইসেন্স লিংকে নির্দেশিকা দেখুন।

ই-ট্রেড লাইসেন্স কি?

ই-ট্রেড লাইসেন্স হল অনলাইন ভিত্তিক। যার মাধ্যমে খুব দ্রুত এবং সহজ ভাবে লাইসেন্স এর আবেদন করা যায়। ই-ট্রেড গুগলে সার্চ করলেই সরকারি সাইট চলে আসে।

 যার মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে হয়ে যায় আবেদন।এরপর নির্ধারিত তারিখে লাইসেন্স নিয়ে আসা যায়। খুব সহজ এবং দ্রুত হওয়ার জন্য বর্তমানে জনপ্রিয় ই-ট্রেড লইসেন্স।

ই-ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম

ই-ট্রেড লাইসেন্স করতে হলে প্রথমেই গুগলে সার্চ করুন ই- ট্রেড। এরপর ফর্ম এ ক্লিক করে পূরণ করে নিন। নিজের এবং ব্যবসার সকল তথ্য দিন।

এরপর আবেদন শেষ হলে আপনার দেয়া ফোন নম্বরে ই-ট্রেড লাইসেন্স নেয়ার তারিখ দিবে। সেই তারিখে আপনি আনতে পারবেন আপনার লাইসেন্স।

Visit www.dscc.gov.bd for e-trade license

ই–কমার্স ব্যবসার জন্য কি ট্রেড লাইসেন্স লাগে ?

বর্তমানে ইকমার্সের জন্য ট্রেড লাইসেন্স করা যায়। আপনার যদি কোন ই-কমার্স সাইট বা পেজ থাকে। তবে আপনি লাইসেন্স করে রেজিষ্টার ভুক্ত হতে পারেন।

এতে করে আপনার ব্যবসা করা অনেক সহজ হবে। বিভিন্ন কাজে লাইসেন্স না থাকলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যায়।

কিন্তু আপনার লাইসেন্স থাকলে আপনি খুব সহজে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন। প্রতিটি ব্যবসা ছোট বা বড় তার জন্য প্রয়োজন লাইসেন্স।

ট্রেড লাইসেন্স আপনার ব্যবসার পথকে করবে সহজ এবং বৈধ করে। তাই নিজের ব্যবসাকে বৈধ ভাবে পরিচয় দিতে এবং ঝামেলা কমাতে আপনি করে নিন ট্রেড লাইসেন্স।

আধুনিক যুগে উন্নত ব্যবস্থায় করতে পারেন ই-ট্রেড লাইসেন্স,যার ফলে আপনাকে ব্যবসার কাজ রেখে দৌড়াতে হবে না বারবার। ঘরে বা অফিসে বসেই করতে পারেন ই-ট্রেড লাইসেন্স।
আমাদের শেষ কথা

আমাদের বাংলা আইটি ব্লগে প্রতিনিয়ত অনলাইন ইনকাম এবং ব্লগিং নিয়ে খুঁটিনাটি সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে।

ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আপনাদের যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করবেন। আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তর কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানিয়ে দিব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top