স্যাটেলাইট কি | বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এখন কোথায় | What is satellite in bengali

Satellite কি : What is Satellite in bengali.  স্যাটেলাইট কাকে বলে? স্যাটেলাইট সম্পর্কে জানেনা এমন মানুষকে খুঁজে পাওয়া কঠিন।

স্যাটেলাইট কি | বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এখন কোথায় | What is satellite in bengali
স্যাটেলাইট কি | বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এখন কোথায়

কারণ বর্তমান সময়ে আমাদের সবার স্যাটেলাইটের সাথে পরিচিতি রয়েছে। কারণ আজকের দিনে আমাদের বাংলাদেশের জন্য কিন্তু নিজস্ব স্যাটেলাইট আবিষ্কার করা হয়েছে।

আর এই মহাকাশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মহাজাগতিক বস্তু রয়েছে। তবে এইসব বস্তু গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বস্তুর নাম হল উপগ্রহ।

যাকে ইংরেজি ভাষাতে বলা হয়ে থাকে স্যাটেলাইট। আর মানব সৃষ্ট স্যাটেলাইট নামক এই কৃত্রিম উপগ্রহটি প্রতিনিয়ত আমাদের পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে।

তবে স্যাটেলাইট এর সাথে আমরা সবাই পরিচিত হলেও এই কৃত্রিম উপগ্রহটি সম্পর্কে আমাদের মধ্যে জানার শেষ নেই।

মূলত স্যাটেলাইট কি (what is satellite in Bangla) এই স্যাটেলাইট কিভাবে কাজ করে এবং একটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা কি কি উপকার পেতে পারি সে সম্পর্কে আমাদের মধ্যে অনেক মানুষের জানার ইচ্ছা রয়েছে।

আর সে কারণেই মূলত আজকের এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে মূলত আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি স্যাটেলাইট কি (satellite কি), স্যাটেলাইটের কাজ কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

তো যদি আপনি মানব সৃষ্ট এই উপগ্রহটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে।

আপনি আরোও দেখতে পারেন…

কারণ আজকের এই আর্টিকেলে স্যাটেলাইট ( Satellite ki ) সম্পর্কিত যে সব খুঁটিনাটি বিষয় আছে, তার সবগুলো বিষয় সহজভাবে আলোচনা করব।

তাই চেষ্টা করবেন আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার।

তাহলে আজকের পর থেকে আপনার মনে স্যাটেলাইট সম্পর্কিত কোন বিষয়ে অজানা থাকবে না। তো চলুন এবার তাহলে সরাসরি মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।

স্যাটেলাইট কি ?

সহজ ভাষায় বলতে গেলে স্যাটেলাইট হল বিশেষ একধরনের মহাজাগতিক বস্তু, যা মানব সৃষ্ট একটি কৃত্রিম উপগ্রহ। যে উপগ্রহটির মূল কাজ হলো পৃথিবীর সহ অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু গুলো কে প্রতিনিয়ত প্রদক্ষিণ করা।

এই স্যাটেলাইট হলো মানুষের তৈরি এক ধরনের উন্নত মেশিন, যা মূলত মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়ে থাকে।

এবং উৎক্ষেপণ এর পরে এই মেশিনটি পৃথিবী সহ অন্যান্য মহাজাগতিক উপগ্রহ গুলো কে কেন্দ্র করে নিজ কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।

তবে স্যাটেলাইট কি এই বিষয়টিকে যদি আর একটু আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চাই

তাহলে বলতে হবে যে, তথ্য সংগ্রহ কিংবা যোগাযোগ রাখার জন্য পৃথিবী অথবা অথবা অন্যান্য কোন গ্রহের চারপাশে প্রদক্ষিণ করার জন্য পৃথিবী থেকে যেসব উন্নত মানের মেশিন কে পাঠানো হয়।

সেই সব মেশিন কে বলা হয়ে থাকে স্যাটেলাইট।

স্যাটেলাইট কিভাবে তথ্য পাঠায় ?

উপরের আলোচনায় স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আশা করি এই আলোচনা থেকে আপনি স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে পরিস্কার একটা ধারণা পেয়ে গেছেন।

এবার অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে, পৃথিবী থেকে যেসব স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়ে থাকে, সেই স্যাটেলাইট গুলো আসলে কিভাবে আমাদের পৃথিবীতে তথ্য পাঠায়।

যদি আপনার মনে এই প্রশ্নটি জেগে থাকে তাহলে আপনাকে নিচের আলোচিত আলোচনায় একটু নজর রাখতে হবে। তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে স্যাটেলাইট কিভাবে তথ্য পাঠায়।

যেহেতু আপনি আধুনিক এই যুগে বসবাস করছেন এবং আপনার হাতেও বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন যন্ত্র ব্যবহার করেছেন।

সেহেতু অবশ্যই অবশ্যই আপনার রেডিও তরঙ্গ সম্পর্কে ধারণা থাকবে। মূলত স্যাটেলাইট থেকে যে তথ্য গুলো আমাদের পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়, সেগুলো কিন্তু এই রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

এবং মহাকাশ এর অজানা মহাজাগতিক বিষয় গুলোকে জানার জন্য একমাত্র উপায় হল রেডিও তরঙ্গ।

মূলত এই রেডিও তরঙ্গ বিভিন্ন সিগনাল এর মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীতে তথ্য পাঠিয়ে থাকে। পৃথিবী থেকে যেসব স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়, সেই স্যাটেলাইট গুলোতে অনেক শক্তি সম্পন্ন অ্যান্টেনা যুক্ত করা থাকে।

এবং এই  অ্যান্টেনা গুলো সিগনাল গুলো কে মানুষের বোধগম্য হিসেবে কনভার্ট করে সেগুলো পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়।

আর সেই পাঠিয়ে দেওয়া তথ্যগুলো বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে যেমন, স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি অথবা কোন শব্দ অথবা স্যাটেলাইটের নিজস্ব অবস্থান জানিয়ে দিয়ে থাকে।

শুধু এটুকু জেনে রাখুন যে, স্যাটেলাইট থেকে যেসব তথ্য পৃথিবীতে পাঠানো হয় সেগুলো মূলত রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

স্যাটেলাইট এর কাজ কি ?

উপরের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা থেকে আপনি স্যাটেলাইট সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

যেসব, সবার শুরুতেই আপনি জেনেছেন যে স্যাটেলাইট কি এবং এর পরবর্তীতে আপনি জানতে পেরেছেন যে স্যাটেলাইট কিভাবে তথ্য পাঠায়।

আশা করি আলোচিত সেই বিষয় গুলো আপনি খুব সহজভাবে বুঝতে পেরেছেন। তবে এর পাশাপাশি আপনাকে আরো বেশ কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে।

আর সেই বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হল স্যাটেলাইট এর কাজ কি। আমরা পৃথিবী থেকে মহাকাশের যেসব স্যাটেলাইট কে স্যাটেলাইট গুলো আসলে কি কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

চলুন এবার তাহলে সে সম্পর্কে একটু ধারনা নেওয়া যাক।

০১| আবহাওয়ার কাজে

আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পৃথিবীর আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে জানতে পারি। কিন্তু কখনো কি আপনি ভেবেছেন যে এই আবহাওয়ার তথ্য গুলো কিভাবে আগে থেকে জানতে পারা যায়?

মানুষ কিভাবে বুঝতে পারে যে আগামী সাত দিনের মধ্যে বৃষ্টি হবে, মানুষ কিভাবে বুঝতে পারে যে আগামী এক মাসের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হবে।

যদি আপনার এই বিষয়টি জানা না থাকে তাহলে শুনে রাখুন, এই সবগুলো কিন্তু স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে আগে থেকেই জানতে পারা যায়।

আর এই আবহাওয়া খবরা-খবর জানার জন্য ব্যবহার করা হয় তাকে স্যাটেলাইট।

তবে শুধুমাত্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্যই স্যাটেলাইট কে ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু আমাদের মানুষের জন্য স্যাটেলাইট এর কাজের মধ্যে এই আবহাওয়ার পূর্বাভাস টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কারণ স্যাটেলাইট এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আগাম পূর্বাভাস এর কারণেই আমরা অনেক বড় বড় বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি।

এই স্যাটেলাইটের কারণেই মূলত আমরা আগত কোন দুর্যোগের সাথে মোকাবিলা করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখতে পারি।

০৩| যোগাযোগ ব্যবস্থা

আপনি হয়তো বা জেনে থাকবেন যে আমাদের ব্যবহার করা টেলিভিশন , মোবাইল ফোন কিংবা রেডিও গুলো চালনা করার জন্য সিগন্যাল এর প্রয়োজন হয়।

কেননা এগুলো সিগন্যাল ছাড়া কখনোই নিজে থেকে চলতে পারবে না। আর এই সিগন্যাল এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখার কাজে স্যাটেলাইট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখার কথাটা শুনে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, পৃথিবী তো ঘূর্ণায়মান, তাহলে স্যাটেলাইট আসলে কিভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অক্ষুন্ন রাখতে পারে।

তো যদি আপনার মনে এই প্রশ্নটি জেগে থাকে তাহলে শুনুন…. স্যাটেলাইট কখনোই একটি স্থানে স্থির থাকে না। বরং এটি পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে নিজস্ব পক্ষপথ পরিবর্তন করে থাকে।

অর্থাৎ পৃথিবী যে গতিতে ঘোরে সেই গতিতে উক্ত স্যাটেলাইটটি ও ঘোরার চেষ্টা করে। আর সে কারণেই মূলত এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমাদের পৃথিবীতে থাকা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অক্ষুন্ন রাখা সক্ষম হয়েছে।

০৩| অনুসন্ধান করার কাজে

আমরা এই মহাজগৎ সম্পর্কে যেসব অজানা বিষয় গুলো কে জানতে পারি। সে বিষয় গুলো জানার পেছনে যে বস্তুটি অবদান অপরিসীম সেই বস্তুটির নাম হল স্যাটেলাইট।

কারণ এই স্যাটেলাইট উপগ্রহ টির মাধ্যমে মূলত আমরা মহাজগত এর বিভিন্ন গ্রহ এবং উপগ্রহ সম্পর্কে অজানা বিষয় গুলোকে জানতে পারি।

এর পাশাপাশি এই পৃথিবীর মানচিত্র তৈরি করার কাজে মূলত স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর সে কারণেই বলা হয়ে থাকে স্যাটেলাইট মূলত অনুসন্ধান করার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মহাজগতে এমন অনেক স্থান রয়েছে, এই মহাজগতে এমন অনেক পথ রয়েছে যেগুলোতে মূলত আমাদের মানুষের পক্ষে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব।

কিন্তু এই অসম্ভব কাজ গুলো কে সম্ভব করে দিয়েছে স্যাটেলাইট। কারণ মানুষের পক্ষে সেখানে যাওয়া অসম্ভব হলেও স্যাটেলাইটের পক্ষে সেখানে যাওয়ার তেমন কোন ব্যাপার না।

এবং সেখানে গিয়ে বিভিন্ন বস্তুগুলো সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য গুলো মহাকাশ থেকে পাঠিয়ে দেয় পৃথিবীর কাছে।

সবচেয়ে অবাক করার মত বিষয় হলো এই স্যাটেলাইট থেকে বিভিন্ন গ্রহ এবং উপগ্রহ সম্পর্কে যে ছবিগুলো পৃথিবীতে পাঠানো হয়।

সেগুলো একবারে পরিষ্কার এবং স্পষ্ট হয়ে থাকে, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণে কোন প্রকার ক্ষতি হয় না

স্যাটেলাইটের কত প্রকার ?

স্যাটেলাইট কি এবং স্যাটেলাইটের কাজ কি সে সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনাকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিতে হবে কারণ বর্তমান সময়ে আপনি বিভিন্ন ধরনের স্যাটেলাইট দেখতে পারবেন।

তো আমাদের সবার ধারণা যে স্যাটেলাইট আসলে একই প্রকারের হয়ে থাকে। কিন্তু না! এই ধারণা আসলে সম্পূর্ণ ভুল।

কারণ স্যাটেলাইট এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পার্থক্য। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক যে স্যাটেলাইট কত প্রকার ও কি কি। যেন আপনার মনের মধ্যে স্যাটেলাইট সম্পর্কিত কোন বিষয় জানা না থাকে।

আপনি আরোও পড়তে পারেন…

বর্তমান সময়ে এ পৃথিবীতে মোট দুই ধরনের স্যাটেলাইট রয়েছে আর এই দুই ধরনের স্যাটেলাইটগুলো হলোঃ

  1. মানুষের তৈরি করা স্যাটেলাইট
  2. প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি হওয়া স্যাটেলাইট

এখন হয়তো বা আপনি ভাবছেন যে স্যাটেলাইট তো মানুষের তৈরি করা এক ধরনের উন্নত মেশিন। তাহলে এই মেশিনটি আবার প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হয় কিভাবে।

যদি আপনার মনে এই প্রশ্নটি জেগে থাকে তাহলে শুনে রাখুন স্যাটেলাইট একটি মেশিন হলেও স্যাটেলাইট কে এক ধরনের উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে।

আর বর্তমান মহাজগতে বিভিন্ন ধরনের উপগ্রহ রয়েছে যেমন চাঁদ, পৃথিবী ইত্যাদি।

আর এই মহাজগতে থাকা উপগ্রহ গ্রহ গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র চাঁদ আর পৃথিবীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। কেননা বর্তমান সময়ে এই মহাজগতের প্রায় 171 টি উপগ্রহ সম্পর্কে জানা গেছে।

তবে মানুষের সৃষ্ট যেসব স্যাটেলাইট উপগ্রহ রয়েছে সেগুলো কিন্তু একটি উপগ্রহ একরকম আকার আকৃতির হয়ে থাকে।

চলুন এবার তাহলে মানুষের সৃষ্টি করা সেই কৃত্রিম উপগ্রহ গুলো সম্পর্কে একটু আলোকপাত করা যাক।

বিভিন্ন ধরণের কৃত্রিম স্যাটেলাইট

আমি উপরেই একটা কথা বলছি যে মানুষের তৈরি করা এই স্যাটেলাইট নামক উপগ্রহগুলো কিন্তু বিভিন্ন আকার আকৃতির হয়ে থাকে।

এবং এই উপগ্রহগুলো কে ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

আর এই পার্থক্য গত দিক থেকে কৃত্রিম স্যাটেলাইট গুলোকে মূলত প্রধানত ৮ টি ভাগে ভাগ করা হয়। তো চলুন এবার তাহলে সেই আট প্রকার কৃত্রিম উপগ্রহ সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যাক।

০১| কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট

সহজ কথায় বলতে গেলে যেসব স্যাটেলাইট মূলত কমিউনিকেশন করার কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেসব স্যাটেলাইট কে বলা হয়ে থাকে কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট।

মূলত এই ধরনের স্যাটেলাইট গুলোর মাধ্যমে রেডিও টেলি কমিউনিকেশন ট্রান্সপন্ডার সাহায্য পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে রীলে করা হয়ে থাকে।

০২| রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট

এই ধরনের উন্নতমানের স্যাটেলাইট গুলো মূলত রিমোট সেন্সিং এর মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

মূলত এই ধরনের স্যাটেলাইট গুলোতে উন্নত সেন্সর যুক্ত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ এর মাধ্যমে কোন প্রকার শরীরের স্পর্শ ছাড়াই পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে, বায়ুমণ্ডল থেকে শুরু করে মহাসাগর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে রাডার ইমেজ তুলতে সক্ষম।

এই ধরনের রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট গুলোর সাহায্য আবহাওয়া, বাস্তুবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা ইত্যাদির কাজে লাগে।

০৩| গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম

এই ধরনের গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম যুক্ত স্যাটেলাইট গুলোর মাধ্যমে মূলত জিপিএস কে ডিটেক্ট করা যায়। এর ফলে আকাশ, সমুদ্র, কিংবা স্থলবন্দরে থাকা মানুষ সহ অন্যান্য জীব ও জড় পদার্থের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।

এই পজিশনিং কে সেনাবাহিনীরা অধিক সময় ব্যবহার করে।

০৪| ড্রোন স্যাটেলাইট

এই ধরনের স্যাটেলাইটগুলো মূলত এক ধরনের চালকবিহীন বিমান যা মূলত মহাকাশে ভেসে বেড়ায়। এবং মহাকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন অজানা তথ্যগুলো পৃথিবীতে প্রেরণ করে।

তবে এই ধরনের স্যাটেলাইট এর ব্যবহার করার বেশকিছু কারণ রয়েছে, আর তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো এটি পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

০৫| গ্রাউন্ড স্যাটেলাইট

এই স্যাটেলাইটের নাম শুনে হয়তবা আপনি অনুমান করতে পেরেছেন যে এই ধরনের স্যাটেলাইট গুলো মূলত পৃথিবীর মধ্যে অবস্থান করে থাকে।

তবে এই ধরনের স্যাটেলাইট গুলোর মূল কাজ হলো কোন সিগনাল কে রিসিভ করা এবং সেই সিগনাল কে মানুষের বোধগম্য হিসেবে তৈরি করে পুনরায় পৃথিবীতে প্রেরণ করা।

০৬| পোলার স্যাটেলাইট

আমাদের পৃথিবীতে যেসব মেরু অঞ্চল রয়েছে, সেসব অঞ্চলের জন্য এই ধরনের পোলার স্যাটেলাইট ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মূলত মেরু অঞ্চল গুলো কে পর্যবেক্ষণ করার জন্য এই ধরনের পোলার স্যাটেলাইট বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

০৭| ন্যানো, স্মল ও স্মার্ট স্যাটেলাইট

মানুষের তৈরি করা স্যাটেলাইট গুলোর মধ্যে যেসব স্যাটেলাইট এর আয়তন এবং আকার অনেক ছোট হয়ে থাকে সেগুলো কে মূলত বলা হয় ন্যানো, স্মল ও স্মার্ট স্যাটেলাইট।

এই ধরনের ছোট ছোট স্যাটেলাইট গুলোর ওজন 1 কেজি থেকে শুরু করে 1000 কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। যেগুলো আকারের দিক থেকে অনেক ছোট।

০৮| জিওসেন্ট্রিক অরবিট টাইপ বা জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট

মহাকাশে পাঠানো যেসব স্যাটেলাইট মূলত পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির সাথে তাল মিলিয়ে নিজেও অনবরত ঘুরতে থাকে সেই ধরনের স্যাটেলাইট গুলোকে বলা হয়ে থাকে জিওসেন্ট্রিক অরবিট টাইপ বা জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট।

বাংলাদেশে স্যাটেলাইটের ইতিহাস

আপনি হয়তো বা জেনে থাকবেন যে বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশেও নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে তবে আপনাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের মনে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন জেগে থাকে।

এই স্যাটেলাইট সম্পর্কে যেমন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কি, বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এখন কোথায়

তো আপনি যদি স্যাটেলাইট বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

তো চলুন এবার তাহলে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে একটু আলোকপাত করা যাক।

আমাদের বাংলাদেশের সর্বপ্রথম 2018 সালের 11 ই মে, বাংলাদেশ সময় 12 ই মে বঙ্গবন্ধু-1 নামক একটি স্যাটেলাইট ভূস্থির করা হয়।

এর মধ্য দিয়ে আমাদের বাংলাদেশ গোটা বিশ্বের বুকে 57 তম দেশ হিসেবে নিজস্ব একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশ থেকে উৎক্ষেপণ করা এই স্যাটেলাইট থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের টিভি চ্যানেল সম্প্রসারণ কার্যক্রম সঠিকভাবে সার্ভিস প্রদান করতে পারবে, এর পাশাপাশি বাংলাদেশের যেসব পার্বত্য এবং হাওর এলাকা রয়েছে সেগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে।

এবং সবশেষে আগত প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলো সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া যাবে।

পৃথিবী থেকে স্যাটেলাইটের দূরত্ব কত যদি জানতে চান তাহলে জেনে রাখা ভাল যে স্যাটেলাইটটি পৃথিবী থেকে প্রায় 22,000 মাইল দূরে অবস্থিত।

স্যাটেলাইটের আপলিঙ্ক ও ডাউনলিঙ্ক কি ?

স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর এবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে স্যাটেলাইটের আপলিঙ্ক ও ডাউনলিঙ্ক কি।

এবার আমি মূলত এই বিষয়টিকে একটু সহজ ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। যাতে করে আপনার স্যাটেলাইট সম্পর্কিত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অজানা থাকে।

তো দেখুন মূলত গ্রাউন্ড স্টেশন এন্টেনা থেকে যে ডাটা এগুলো মূলত স্যাটেলাইটের রিসিভিং এন্টেনায় পৌঁছায় সেই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে স্যাটেলাইট অ্যাপ লিঙ্ক

অপরদিকে কোন একটি স্যাটেলাইট এর ট্রান্সমিটিং অ্যান্টেনা থেকে যে ডাটা গুলো মূলত গ্রাউন্ড স্টেশনে এসে পৌঁছায় সে গুলোকে বলা হয় ডাউন লিঙ্ক

স্যাটেলাইটের সুবিধা কি কি

স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনাকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিতে হবে। সেটি হলো যে স্যাটেলাইট যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে আসলে কি কি সুবিধা ভোগ করা যাবে।

চলুন এবার তাহলে স্যাটেলাইটের সুবিধা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

  1. আপনি হয়তো বা জেনে থাকবেন যে স্যাটেলাইট গুলো মূলত সম্পূর্ণভাবে সৌর শক্তির উপর নির্ভর করে চলে। এবং যেহেতু এই উন্নত মেশিনগুলো সৌরশক্তিতে চলে সেহেতু এ ধরনের স্যাটেলাইট গুলো পরিচালনা করার জন্য কোন প্রকার শক্তির অপচয় হয় না।
  2. গ্রাউন্ড স্টেশনে যে স্যাটেলাইট গুলো স্থাপন করা হয় সেগুলো কিন্তু খুব সহজেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করা সম্ভব।
  3. সে দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে কোন বিপদ হওয়ার আগেই এ ধরনের স্যাটেলাইট গুলোকে স্থানান্তর করা যাবে।
  4. স্যাটেলাইট গুলোর মধ্যে যে ট্রান্সমিটিং ক্ষমতা রয়েছে সেই ক্ষমতা কিন্তু একই সাথে অনেকটা ভৌগোলিক জায়গা কে কভার করা সম্ভব।
  5. স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় বার্তা গুলোকে খুব দ্রুততার সাথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত করতে পারি।
  6. যদিওবা একটি স্যাটেলাইট তৈরি করা থেকে শুরু করে উক্ত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ পর্যন্ত অনেক টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন হয়।
  7. কিন্তু এই ধরনের কমিউনিকেশন সিস্টেম গুলো মূলত রক্ষণাবেক্ষণ করা অনেকটা সহজ এবং ব্যয় সাপেক্ষ।

তো কোন একটি স্যাটেলাইট এর কি কি সুবিধা রয়েছে সেগুলো আসলে লিখে শেষ করা সম্ভব না।

তবে যেগুলো যেগুলো বলার প্রয়োজন সেগুলো আমি উপরে উল্লেখ করেছি। আশা করি একটি স্যাটেলাইটের সুবিধা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে গেছেন।

স্যাটেলাইট এর অসুবিধা

কোন একটি মুদ্রার যেমন এপিঠ-ওপিঠ রয়েছে, ঠিক তেমনি ভাবে একটি স্যাটেলাইট এর যেমন সুবিধা রয়েছে অপরদিকে কোন একটি স্যাটেলাইটের ভিন্ন ভিন্ন অসুবিধা রয়েছে ।

তবে এবার আপনার মনে প্রশ্ন জেগে থাকতে পারে যে একটি স্যাটেলাইটের কি কি অসুবিধা থাকতে পারে।

তো চলুন এবার তাহলে স্যাটেলাইটের অসুবিধা গুলো সম্পর্কে একটু অবগত হওয়া যাক।

  1. কোন একটি স্যাটেলাইট এর ডিজাইন থেকে শুরু করে উক্ত স্যাটেলাইট তৈরি করা এবং সেই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা অব্দি বেশ ভালো পরিমাণ টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন হয়।
  2. যদি কোনো কারণবশত উৎক্ষেপণ করা স্যাটেলাইট এর কোন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে সেই যন্ত্রপাতি মেরামত করতে অনেক টাকা ব্যয় করার প্রয়োজন হয় এবং এসব যন্ত্রপাতি মেরামত করার কাজটা মোটেও সহজ নয়।
  3. আপনি উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন যে স্যাটেলাইট গুলো মূলত সূর্যের শক্তির মাধ্যমে নিজেকে চালিত করে থাকে। তবে এই সূর্যের তাপ মাত্রা যদি অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু স্যাটেলাইট গুলো ভুল সিগন্যাল প্রদান করে থাকে।

তো একটি স্যাটেলাইট এর বিভিন্ন সুবিধার পাশাপাশি যেসব অসুবিধা রয়েছে সেগুলো আমি উপরে আলোচনা করলাম।

আশাকরি আপনি স্যাটেলাইটের সুবিধা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি স্যাটেলাইটের অসুবিধাগুলো সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন।

আপনি আরোও পড়ুন…

Satellite কি  নিয়ে আমাদের শেষকথা 

প্রিয় পাঠক, বর্তমান সময়ে স্যাটেলাইট হলো আমাদের সবার পরিচিত একটা বস্তু। যে বস্তুর মাধ্যমে আমরা মহাবিশ্বের বিভিন্ন অজানা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারি।

তবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এইসব তথ্য সম্পর্কে জানা গেলেও স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে আমরা এখনও অনেকেই জানিনা।

আর সে কারণেই মূলত আজকের আর্টিকেলে আমি স্যাটেলাইট কি এবং স্যাটেলাইট এর আদ্যোপান্ত হয়েছে তার সবগুলো বিষয় নিয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচনা করেছি।

আশা করি আজকের আলোচিত আর্টিকেল থেকে আপনি স্যাটেলাইট কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গেছেন।

 আর এমন সব অজানা বিষয় গুলোকে সহজ ভাষায় জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সাথে থাকবেন আর্টিকেলটির এই পর্যন্ত আসার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top