মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো কি কি ?

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় : আমাদের জীবনে মোবাইল একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে দাড়িয়েছে।

যেখানেই যাই না কেন আমরা আমাদের সাথে সর্বদাই মোবাইল ফোন রাখি।

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো কি কি ?
মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

মজার বিষয় হলো, একজন মানুষ যখন সকালে ঘুম থেকে উঠে। তখন সবার আগে ঐ মানুষটি তার বালিশের পাশে থাকা মোবাইল টি চেক করে তার দিনের শুরু করে।

কিন্তুু আপনি কি জানেন, এই মোবাইল আমাদের জীবনে একটি মোবাইল আসক্তি রোগ দাড়িয়েছে ?

যদিও এখন পর্যন্ত তেমন গবেষনা করা হয়নি, কিন্তুু এই মোবাইলের আসক্তিও কিন্তুু এক ধরনের রোগের ন্যায়।

যে রোগে আপনি আমি বা আমাদের মতো অনেক মানুষ নিজের অজান্তেই আক্রান্ত হয়ে পড়ছি। 

এমনকি অনেক বাবা-মা রয়েছেন যারা কিনা শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় খুঁজতে হয়রান হয়ে গেছে । গার্ডিয়ানরা চাই মোবাইল কম ব্যবহার করার উপায় তাদের শিশুদের উপর প্রয়োগ করতে।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে আমরা অনেকেই বিভিন্ন রকমের শারীরিক এবং মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছি।

আপনি আরো পড়তে পারেন…

আর এসব কিছুর মূলে রয়েছে মোবাইল ফোনের নিয়ন্ত্রনহীন ব্যবহার। যাকে এক কথায় বলা হয়, Mobile Addiction (মোবাইল আসক্তি)।

আর যদি আপনি এই আসক্তিতে পুরোপুরি ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েন।

তাহলে কোনো একটা সময়ে আপনি আপনার আচরণগত দিক থেকে মানসিক দিক পর্যন্ত প্রায় বিভিন্ন সমস্যা লক্ষ্যে করতে পারবেন ৷

যা ধীরে ধীরে আপনাকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাবে। যেটার জন্য আপনি মোটেও প্রস্তুত থাকবেন না ৷

কেননা, নেশা কখনই কারো জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। আর মোবাইলের আসক্তিও এক ধরনের নেশার ন্যায়।

বর্তমান সময়ে এমন কিছু অনলাইন গেম রয়েছে যার যার জন্য মোবাইল আসক্তির ছবি আপনি নিজেই দেখতে পারবেন। কিছু ছেলেপেলে একসাথে মিলে অনলাইন গেম খেলে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দিচ্ছে।

হয়তবা আপনিও এই নেশায় ক্রমাগত ভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছেন।

কিংবা আপনি যেন এই নেশায় আসক্ত না হন সেই কারণে আপনি গুগলে মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো জানতে এসেছেন। 

How to stop phone addiction? আপনার মতো মানুষ কে মোবাইলের আসক্তি থেকে মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে এই আর্টিকেল টি লেখা হয়েছে।

কারণ আজকে আমি এমন কিছু মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে কথা বলবো। যেগুলো আপনার জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে।

যেমন ধরুন – মোবাইল আসক্তি কি, মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়, ফেসবুক আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়.

এছাড়াও আপনি এয়ারটেল থেকে আরো জানতে পারবেন , How to stop phone addiction for students,

How to get rid of mobile addiction for child, How to stop phone addiction for students essay.

মোবাইল আসক্তি কি – (What is mobile addiction in Bengali)

মানব কল্যানের উদ্দেশ্যে উন্নত প্রযুক্তি সর্বদাই কিছু না কিছু আবিস্কার করার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

আর এই উন্নত প্রযুক্তির নতুন আবিস্কার তখনি মানব কল্যানে সাধিত হবে, যখন মানুষ এই প্রযুক্তি গুলোর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবে।

মুদ্রার যেমন এপিট ওপিঠ আছে, ঠিক তেমনি ভাবে আবিস্কার হওয়া এই প্রযুক্তিরও কিন্তুু ভালো এবং খারাপ দিক আছে।

কিন্তুু আমরা মানব সমাজ বেশিরভাগ সময় এ আবিস্কার গুলোর সঠিক ব্যবহার করতে ভুলে যাই। আর তখনি নানা রকম বিপত্তি।

যেমন ধরুন মোবাইল এর কথা, বিজ্ঞানীরা যখন মোবাইল আবিস্কার করেছিলো।

 সেই সময় মূল উদ্দেশ্যে ছিলো যেন মানব জাতি খুব দ্রুততার সাথে পৃথিবীর এক প্রান্তে থাকা মানুষের সাথে অপর প্রান্তে থেকেও খুব কম সময়ের মধ্যে যোগাযোগ অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে।

কিন্তুু তারা তাদের উদ্দেশ্যে সফল হলেও সেটি আজকের মানব জীবনের জন্য হুমকির ন্যায় হয়ে দাড়িয়েছে।

কারণ বর্তমানে আমরা সেই মোবাইল এর সঠিক ব্যবহার করতে পারছিনা।

কারন, এখন আমরা মোবাইল কে শুধু যোগাযোগ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিনি।

বরং আমাদের জীবনে মূল্যবান সময়ের অর্ধেক সময় গুলো এখন মোবাইলেই ব্যয় করছি।

বর্তমানে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মূলত দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৬ ঘন্টাই মোবাইলে ব্যয় করছে।

আর এই ধরনের নিয়ন্ত্রনহীন মোবাইল ব্যবহার কে বলা হচ্ছে মোবাইল আসক্তি। যা একটি নেশার ন্যায় হয়ে দাড়িয়েছে।

ফেসবুক আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

আপনি যদি জানতে চান কিভাবে ফেসবুক আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ? তাহলে নিচের লেখা গুলা পরে ফেলুন।

ফেসবুক একটি অত্যন্ত আসক্তির মাধ্যম। অনেকে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখতে এটি ব্যবহার করেন।

সমস্যা হল যে এই লোকেদের অনেকেই প্রতিদিন ফেসবুকে ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করে যখন তারা অন্য কিছু করতে পারে।

আপনি যদি মনে করেন যে আপনি Facebook-এ খুব বেশি সময় কাটাচ্ছেন।

তাহলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে আপনি কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন ৷

ফেসবুক আসক্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনাকে প্রতিদিন সামাজিক নেটওয়ার্কে ব্যয় করার পরিমাণ সীমিত করতে হবে।

আপনি যদি সম্পূর্ণভাবে Facebook ব্যবহার বন্ধ করতে না পারেন তবে নিজের জন্য সীমা নির্ধারণ করার চেষ্টা করুন।

শুরুর জন্য শুধুমাত্র একটি উদ্দেশ্যে অ্যাপটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন:

উদাহরণস্বরূপ

  • শুধুমাত্র সকালে একবার এবং সন্ধ্যায় একবার আপনার অ্যাকাউন্ট চেক করুন।
  •  নির্দিষ্ট সময়ে Facebook থেকে লগ আউট করতে পারেন। যাতে এটি কাজ বা পড়াশোনা করার সময় আপনাকে বিভ্রান্ত না করে।
  •  গেম খেলতে বা ভিডিও দেখার জন্য এটি ব্যবহার করবেন না।
  •  এমনকি লগ ইন করবেন না যদি না আপনি সেই কাজের জন্য নির্দিষ্টভাবে সময় নির্ধারণ করেন।

এছাড়াও আপনি নিজেকে Facebook ব্যবহার করার সীমিত চেষ্টা করতে পারেন:

Facebook-এ নিজেকে প্রতিদিন এক ঘন্টা দিন (অথবা যতটুকু সময় সঠিক মনে হয়)।

তারপর সেই ঘন্টা শেষ হলে আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করুন।

মোবাইলের সাথে জড়িত মূল আসক্তি গুলো কি কি ?

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে আরো বেশ কিছু বিষয়ে জেনে নিতে হবে।

তাই প্রথমে আপনাকে জানতে হবে যে, মোবাইল এর সাথে জড়িত মূল আসক্তি গুলো কি কি।

অর্থ্যাৎ, কখন এবং কিভাবে আমরা নিজেকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত করে ফেলছি। চলুন এবার স্বল্প আকারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

  1. আজকের দিনের মানুষের মধ্যে মোবাইল আসক্তির মূল যে কারন আছে সেটি হলো, Social Media.
  2. বর্তমানে মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে নিজের অজান্তেই এতো বেশি সময় মোবাইলে ব্যয় করে আসছে যা সেই মানুষটি নিজেও অনুমান করতে পারবে না ৷ 
  3. এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে থাকা নানা রকম ফিচার যেমন, Text, Message, Chatting ইত্যাদি।
  4. মানব জীবনে এতোটাই প্রভাব ফেলেছে যে  তার আমরা এখন সোশ্যাল মিডিয়া গুলোকে অন্য একটা পৃথিবীর সমান ভেবে বসে আছি। 
  5. শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া নয় বরং এখনকার দিনে এমন সব Online Video Games এসেছে। যে গেমস গুলো খেলতে আমরা এতোটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি যে, আমাদের মূল্যবান সময় গুলো যে বৃথা চলে যাচ্ছে।
  6. কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে নতুন নতুন কোনো কন্টেন্ট আসার অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যায় করে বসে থাকে।
  7. কিন্তুু তার যে মোবাইলের প্রতি এক সুপ্ত আসক্ত জন্মাচ্ছে, সেটা তার কাছে অজানাই থেকে যায়। 
  8. ইন্টারনেট এর সহজলভ্যতার কারনে এখন Porn Video দেখা বেশ সহজ হয়ে দাড়িয়েছে।
  9. সেই কারনে আমাদের উঠতি প্রজন্ম থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তি পর্যন্ত এরা সবাই ক্রমাগত ভাবে নিজের মূল্যবান সময় গুলো নষ্ট করছে। এবং নিজেকে একটা হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। 
  10. আমাদের মধ্যে থাকা মানুষ গুলোর মধ্যে Video দেখায় আসক্ত এমন মানুষের সংখ্যাটাও নেহাৎ কম নয়।
  11. আপনি এমন অনেক মানুষ কে খুজে পাবেন, যারা মূলত ঘন্টার পর ঘন্টা YouTube কিংবা ইউটিউব এর মতো প্লাটফর্ম গুলোতে তারা তাদের মূল্যবান সময় গুলো কে ব্যয় করছে। 

উপরে আমি বেশ কিছু কারন উল্লেখ করে দিয়েছি। যেগুলো মূলত একজন সাধারন মানুষের মধ্যে মোবাইল আসক্ত হওয়ার মূল হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

আর যদি আপনার মধ্যেও উপরোক্ত বদভ্যাস গুলো বিদ্যমান থাকে।

তাহলে ধরে নিন যে, আপনি নিজেও একজন মোবাইলে আসক্ত পাবলিক। আর আপনার জন্য মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো জেনে নেয়াটা অত্যন্ত জরুরী। 

মোবাইল আসক্তির ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে ?

আপনার শরীরে যখন কোনো রোগের আক্রমন ঘটবে। তখন তার প্রদুর্ভাব টের পেতেও ক্ষানিকটা সময় লাগবে।

ঠিক তেমনি ভাবে যখন কোনো ব্যক্তি মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়বে তখন এই আসক্তির ফলে তার শরীরের যেসব ব্যাঘাত ঘটবে।

সেটা টের পেতেও বেশ সময়ের প্রয়োজন হবে।

কিন্তুু আপনি যদি পুরোপুরি ভাবে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েন, তাহলে আপনার মধ্যে বেশ কিছু ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে।

আর একজন ব্যক্তির মোবাইল আসক্তির ফলে যেসব ক্ষতি হয় ( psychological effects of cell phone addictio ).

এবার আমি সেগুলো নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করবো। 

আপনি আরো দেখতে পারেন…

০১| মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব

যদি আপনি পর্যায়ক্রমে ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল ব্যবহার করেন। তাহলে সর্বপ্রথম আপনার মস্তিষ্কের উপর প্রভাব পড়বে ৷

কারণ অনবরত মোবাইল ব্যবহার করার ফলে একজন মানুষের ব্রেন কখনই বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ পায়না।

আর বিশ্রামহীন কোনো কিছুই যে মানুষের দেহের জন্য মঙ্গল নয় সেটা তো আমরা সবাই বেশ ভালো করেই জানি।

আর এই সমস্যার মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে গেলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা রকম সমস্যার দেখা যায়।

যেমন, ডিপ্রেশনে থাকা, নিজের সৃজনশীলতা নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

আর ডিপ্রেশন মানুষের জীবনকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। তা আপনি সহজেই অনুমান করতে পারবেন৷ 

০২|কাজ কামে ফোকাস নেই

আপনি যদি নিজের অজান্তে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তাহলে সবচেয়ে যে সমস্যাটি আপনার নজরে আসবে, সেটি হলো আপনি কোনো কাজে ফোকাস রাখতে পারবেন না।

অর্থ্যাৎ, যে কাজটি আপনার অতি দ্রুত করার দরকার৷ কিন্তুু আপনি সেই কাজটি মন দিয়ে করতে পারবেন না।

কারণ, আপনার ব্রেন এবং মানসিকতার ব্যাঘাত ঘটে গেছে। তাই আপনি কোনো কাজেই নিজেকে ফোকাস রাখতে পারবেন না।

এবং আপনার মধ্যে সর্বদাই এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করবে। যা আপনার জন্য কখনই মঙ্গল বয়ে আনবে না। 

০৩| ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে

ঘুম মানব জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটা বিষয় ৷ আর ডক্টরদের নিয়ম অনুসারে একজন মানুষকে দৈনিক ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।

কিন্তুু যারা মোবাইলে আসক্ত, তারা কখনই এই নিয়ম মেনে ঘুমাতে পারেনা।

কারণ তারা মোবাইল ব্যবহার করতে করতে রাতের বেশিরভাগ সময়টা কাটিয়ে দেয়।

আবার কিছু কিছু মানুষ আছেন, যারা রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লেও ঘুমানোর কথা ভুলেই যায়।

আর ঘুমাতে ঘুমাতে রাত ৬ টা বেজে যায়। আসলে যদি আপনিও এই রকম না ঘুমিয়ে রাত কাটিয়ে দেন।

তাহলে আপনার মানসিক সমস্যা থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা এবং সেক্সুয়াল সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। 

০৪| মানসিক চাপ বাড়বে

যেসব মানুষ মানসিক চাপে ভুগে থাকেন। তারা হুট করে কোনো সিন্ধান্ত নিতে পারেন না।

এর প্রধান কারন হলো তারা বেশিরভাগ সময় নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা করে থাকেন। আর এর ফলে তাদের পক্ষে কোনো সমস্যা বা তাৎক্ষনিক সিন্ধান্ত নেয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

আর এই মানসিক চাপ এর সমস্যাটি মোবাইল আসক্তির ফলেও হয়ে থাকে।

কারণ অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার ফলে আপনি অলরেডি আপনার ব্রেনের উপর বিশ্রামহীন চাপ প্রয়োগ করছেন।

এবং এই আসক্তির মাত্রা বেশি হওয়ার ফলে আপনারও এই মানসিক চাপে আক্রান্ত হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। 

০৫| চোখের সমস্যা হবে

একটি মানুষ যখন মোবাইল ব্যবহার করে তখন ঐ মানুষ এর মধ্যে থাকা চোখ গুলো অবিরত ঐ মোবাইলের স্ক্রিনের উপরে তাকিয়ে থাকে।

কিন্তুু আপনি কি জানেন, মোবাইলে ভেসে আসা এই আলো গুলো আমাদের চোখের জন্য কতটা ক্ষতিকর ?

আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন কারণ মোবাইলের ডিসপ্লে থেকে ভাসা আসা এই আলোর মধ্যে ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মী আমাদের চোখের অনেক অনেক ক্ষতি করে থাকে।

যা একটা সময় আমাদের চোখের দেখার ক্ষমতা কে নষ্ট করে দিতে সক্ষম। 

০৬| জীবনে উন্নতি না হওয়া 

দেখুন ছাত্রদের কাজ হলো পড়াশোনা করা, শিক্ষকের কাজ হলো শিক্ষাদান করা।

কিন্তুু আপনি যদি আপনার নিজের কাজ গুলো না করে শুধু মোবাইল টিপে সময় ব্যয় করেন।

তাহলে কি আপনি জীবনে কোনো উন্নতি করতে পারবেন ? – না! বরং আপনি যখন নিজের কাজে ফোকাস রেখে সেই কাজটি করতে থাকবেন।

ঠিক তখনি আপনি সফলতা পাবেন। কিন্তুু আপনি যদি আপনার কাজ কে ফোকাস না রেখে খালি মোবাইল ব্যবহার করেন।

তাহলে আপনার জীবনে অন্ধকার ছাড়া কিছুই পাবেন না। 

০৭| একা জীবন কাটানো 

যখন কোনো একটি মানুষ অনবরত মোবাইল ব্যবহার করবে। তখন সেই মানুষটি স্বাভাবিক সমাজ থেকে একবারে বিছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

কেননা, সে তার জীবনের মূল্যবান সময় গুলো মোবাইলে ব্যয় করার কারনে বাস্তবিক জীবনে তেমন বন্ধুকে খুজে পাবে না।

তাই যখনি সে মোবাইল জগৎ থেকে বাস্তবিক জগতে বিচরন করবে।

তখনি সে একাকীত্ব অনুভব করবে যা তার জীবনের ডিপ্রেশনে পড়ার মূল কারণ হয়ে দাড়াবে।

কেননা, সে উক্ত সময়ে সমাজের প্রতিকুল পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারবে না।  

স্মার্টফোন আসক্তির লক্ষণ (mobile addiction symptoms)

উপরের সবগুলো আলোচনা থেকে আপনি মোবাইল আসক্তি কি ? এবং আপনি যদি মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েন তাহলে আপনার কি কি ক্ষতি হবে।

আমি সেই বিষয় গুলো নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি।

তো এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, মোবাইল আসক্তির লক্ষন গুলো কি কি। অর্থ্যাৎ, আপনি যে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছেন তা বুঝবেন কিভাবে।

তো চলুন এবার সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। 

  1. মনে করুন আপনি বই পড়ছেন কিংবা আপনার কোনো চাকরিক্ষেত্রে বসে কাজ করছেন। কিন্তুু আপনার মাথায় শুধু ফেসবুকের মেসেজ কিংবা ইউটিউবে আসা নতুন নতুন ভিডিও এর কথা গুলো বারবার ঘুরপাক খাচ্ছে।
  2. তাহলে বুঝে নিবেন আপনি মোবাইল আসক্তির চরম লেভেলে চলে গেছেন। 
  3. আমাদের সবার ই নিজস্ব পরিবার আছে। কিন্তুু আপনি নিজের পরিবারের সাথে থেকেও তাদের সাথে ঠিকমতো কথা বলছেন না।
  4. কিংবা আপনার পরিবারে আসা মানুষ গুলোর কাছ থেকে আপনি ক্রমাগত ভাবে দুরে চলে যাচ্ছেন। তবে বুঝে নিন এটা আপনার অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার ফলাফল। 
  5. কোনো কারনে আপনার ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলো কিংবা আপনার মোবাইল টি খারাপ হয়ে গেলো। ঠিক এই সময়ে আপনি যদি চিংড়ি মাছের মতো ছটফট করতে থাকেন।
  6. তাহলে এই ছটফটানি দেখে আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে আপনি এখন পুরোপুরি মোবাইলে আসক্ত। 
  7. রাতে শোয়ার আগে চিন্তা করলেন যে আজ একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাবেন। কিন্তুু যেই হাতে ফোন আসলো সেই আপনি ঘুমের কথা ভুলে গেলেন।
  8. আর রাত শেষের দিকে আপনার ঐ ঘুমানোর কথা মনে পড়লো। তাহলে বুঝে নিবেন, আপনি এখন মোবাইলে আসক্ত। 
  9. কোনো কারন নেই অথচ আপনি বারবার মোবাইল বের করে ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন চেক করছেন।
  10. তবে বুঝে নিন আপনিও এখন মোবাইল আসক্তের দলে যুক্ত হয়ে গেছেন। 

তবে শুধু এই কয়েকটি লক্ষনের মাধ্যমে আপনি মোবাইলে আসক্ত কিনা তা আসলে বোঝানো সম্ভব নয়।

এর বাইরেও এমন অনেক লক্ষন আছে যেগুলো দেখলে আপনার মোবাইল আসক্তি কে অনুমান করা সম্ভব।

কিন্তুু যেগুলো বলার প্রয়োজন ছিলো সেগুলো আমি উপরেই উল্লেখ করেছি। 

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় 

How to stop phone addiction wikihow? তো উপরের আলোচনা থেকে আপনি মোবাইল ফোনের আসক্তি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

এর পাশাপাশি অতিরক্ত হারে মোবাইল আসক্তি রোগ গুলো সম্পর্কেও ধারনা পেয়ে গেছেন।

এবার আপনাকে মোবাইল কম ব্যবহার করার উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

তো চলুন তাহলে এবার মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

০১| মোবাইল ব্যবহার করার সময় নির্ধারন করুনঃ সারাদিন সারারাতো মোবাইল ব্যবহার না করে নির্দিষ্ট একটা সময় নির্ধারন করুন।

যে সময় গুলোতে আপনি অন্য কোনো কাজ করবেন না বরং আপনি শুধু ঐ মোবাইল ই ব্যবহার করবেন।

০২| মোবাইল নিজের সামনে রাখবেন নাঃ চোখের সামনে খাবার থাকলে ক্ষুধার পরিমান বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

ঠিক তেমনি ভাবে মোবাইল যখন আপনার চোখের সামনে থাকবে তখন মোবাইল ব্যবহার করার ইচ্ছে জাগবে।

তাই চেস্টা করবেন আপনার নিজের সামনে থেকে মোবাইল কে দুরে রাখার ৷

আপনার জন্য আরো লেখা…

০৩| মোবাইল থেকে দূরে থাকার উপায় খুজুনঃ পৃথিবীতে সৃষ্ট প্রত্যেকটা সমস্যার কোনো না কোনো সমাধান আছে ৷

তাই কিভাবে মোবাইল ফোন থেকে দুরে থাকা যায় সে নিয়ে সুস্থ মস্তিষ্কে ভাবুন ৷ দেখবেন একটা না একটা উপায় বের হয়ে আসবে ৷

০৪| একাকীত্ব কাটানোর অন্যান্য উপায় বের করুনঃ যখন আপনি একাকী থাকবেন। তখন মোবাইল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।

বরং এই কাজটি ছাড়া অন্য কি কি করা যায়, সে নিয়ে ভাবুন। এবং আপনার ভালো লাগা অন্যান্য কাজ গুলো করতে থাকুন।

০৫| যতটা সম্ভব মোবাইলে কম এপস রাখুনঃ মোবাইল আসক্তি দুর করার সবচেয়ে বুদ্ধিমান কাজ হলো সেই মোবাইলে কম পরিমানে অ্যাপস রাখা।

এতে করে আপনার মোবাইল ব্যবহারের সময়টা অনেক গুন কমে যাবে।

০৬| বই পড়ার অভ্যাস করুনঃ বই হলো আমাদের প্রকৃত বন্ধু। এই কথায় বিশ্বাস রেখে আপনার মোবাইল ব্যবহার করার সময় গুলোতে বই পড়ার অভ্যাস করুন।

০৭| সাধারণ কিপ্যাড মোবাইলের ব্যবহারঃ সচারাচর বাটন ফোন গুলোতে কল দেয়া আর গান শোনার বাইরে তেমন কিছু করা যায়না।

তাই আপনি মোবাইলের আসক্তি কে দুর করার জন্য এই ধরনের বাটন ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। 

আমাদের শেষকথা

সময়ের সাথে সাথে Mobie Addiction এর পরিমান বাড়ছে। তাই আজকে আমি মোবাইল আসক্তি কি এবং মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় গুলো নিয়ে পূর্নাঙ্গ ভাবে আলোচনা করেছি।

আশা করি আজকের দেওয়া তথ্য গুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে৷ আর এমন সব উপকারী তথ্য পেতে Bangla it blog এর সাথে থাকবেন৷ ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top