অংশীদারি ব্যবসায় কি | এই ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য, সুবিধা ও অসুবিধা

অংশীদারি ব্যবসায় কি (what is partnership business in Bengali), অংশীদারি ব্যবসায় কত প্রকার? এসকল বিস্তারিত জানতে পারবেন।

অংশীদারি ব্যবসায় কি | এই ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য, সুবিধা ও অসুবিধা
অংশীদারি ব্যবসায় কি

যখন নির্দিষ্ট কোন চুক্তির মাধ্যমে  একাধিক ব্যক্তি সম্মলিত ভাবে মুনাফা লাভ করার লক্ষ্যে।

বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর সূচনা করে। তখন সেই ব্যবসা কে বলা হবে, অংশীদারি ব্যবসা।

আর বাণিজ্য নিয়ম অনুযায়ী কোন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকতে পারবে।

তো এই যুক্ত থাকা কে বাণিজ্যের ভাষায় বলা হয়ে থাকে, অংশীদারি ব্যবসায়।

আর আজকের আলোচনায় আমি আপনাকে আরো পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব, অংশীদারি ব্যবসায় কি বা

অংশীদারী ব্যবসা বলতে কি বুঝায়

আপনি আরোও দেখুন…

অংশীদারি ব্যবসায়ের অপরিহার্য উপাদান গুলো কি কি এবং অংশীদারি ব্যবসায় সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি কি। চলুন তাহলে মূল আলোচনা তে যাওয়া যাক ।

অংশীদারি ব্যবসায় কি / অংশীদারি ব্যবসায় সংজ্ঞা

Partnership Business meaning in Bengali. আমি শুরুতেই আপনাকে বলেছি, [su_highlight background=”#c851e0″]যখন কোন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকবে।[/su_highlight]

এবং [su_highlight background=”#c851e0″]সেই প্রতিষ্ঠান কে পরিচালনা করার জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ এর প্রয়োজন হয়। সে গুলো বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে প্রদান করবে। তখন সেই প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা কে বলা হবে, অংশীদারি ব্যবসা।[/su_highlight]

অর্থাৎ একই ব্যবসার মধ্যে অধিক ব্যক্তির অংশীদার রয়েছে। আর আপনি যদি বাণিজ্য নিয়ম এর ক্ষেত্রে চিন্তা করে দেখেন।

তাহলে আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন যে, তাদের উল্লেখিত নিয়ম অনুযায়ী। নির্দিষ্ট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে সর্বনিম্ন দুইজন থেকে সর্বোচ্চ ২০ জন এর বেশি ব্যক্তির অংশীদারি থাকলে।

সেই ব্যবসা কে অংশীদারি ব্যবসার আওতায় ধরা হবে।

তবে এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে যখন একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। তখন উক্ত ব্যবসার অংশীদার হিসেবে প্রমাণপত্র রাখার প্রয়োজন হয়।

আর সে জন্য উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে অংশীদার থাকা সকল ব্যক্তিরা। বিশেষ একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে নিজেদের অংশীদারিত্বের প্রমাণ রাখে।

আর এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে আপনি বিভিন্ন সুবিধা লক্ষ্য করতে পারবেন। শুধু তাই নয় অংশীদারি ব্যবসার সুবিধার পাশাপাশি এমন অনেক অসুবিধা রয়েছে।

যে গুলো সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত। চলুন এবার তাহলে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য সমুহ

এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা অংশীদারি ব্যবসায় কি সে বিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এবং সেই আলোচনায় আমি আপনাদের জানিয়ে দিয়েছি।

একটি ব্যবসার সাথে একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার কারণে। সেই ধরনের ব্যবসা গুলো কে অংশীদারি ব্যবসায় বলা হবে।

তো এবার আপনাকে আমি অংশীদারি ব্যবসায় এর বৈশিষ্ট্য সমূহ জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। অর্থাৎ এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

চলুন এবার সেই বৈশিষ্ট্য গুলো সম্পর্কে ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক।

  • অধিক সদস্য সংখ্যাঃ অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে অবশ্যই অধিক সদস্য সংখ্যা থাকা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়।
  • অর্থাৎ সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি অংশীদার হিসেবে থাকতে হবে।
  • তাহলেই সেই ব্যবসা কিংবা প্রতিষ্ঠান টি অংশীদারিত্বের আওতায় পড়বে। অন্যথায় সেটি একক মালিকানায় পরিচিত হবে।
  • অংশীদারিত্বের সীমাবদ্ধতাঃ একটি অংশীদারী ব্যবসায় এর সদস্য সংখ্যার পরিমাণ সর্বনিম্ন দুইজন থেকে সর্বোচ্চ 20 জন পর্যন্ত হতে হবে।
  • আর এর থেকে কম সদস্য সংখ্যা হলে তা কখনোই অংশীদারি ব্যবসায় এর স্বীকৃতি পাবে না। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ জন এর বেশি সদস্য হওয়া যাবে না।
  • চুক্তিপত্রের ব্যবহার;  সর্বদাই মনে রাখবেন, অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে চুক্তিপত্র হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি সদস্য যখন কোন একটি ব্যবসা এর মধ্যে অংশীদার হবে।
  • তখন তার কাছে অবশ্যই এক ধরনের প্রমাণপত্র থাকতে হবে। আর সেই প্রমাণ পত্রের মাধ্যমে উক্ত ব্যবসা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য।
  • এবং আপনার অংশীদারীর সকল বিষয় উল্লেখ থাকবে। তবে চুক্তিপত্র না থাকলে অংশীদারি ব্যবসায় সদস্যর একেবারে মূল্যহীন।

পরিচালনার দায়ভারঃ কোন একটি ব্যবসায় অংশীদার হতে হলে একজন ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে।

এর পাশাপাশি যখন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ সুস্থ মস্তিষ্কে কোনো ব্যবসার অংশীদার হতে চাইবে। তাহলে তাকে অংশীদারিত্ব দেওয়া বৈধ।

তবে সকল সদস্য একটি ব্যবসার মধ্যে অংশীদার হতে পারলেও। এই ব্যবসাটি পরিচালনা করার দায়িত্ব একজন কে দিতে হবে। যে ব্যক্তি পুরো ব্যবসাটি কে পরিচালনার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করবে।

মূলধনঃ যেহেতু অংশীদারি ব্যবসা গুলো চুক্তি নির্ভর হয়ে থাকে। সেহেতু এই ধরনের ব্যবসার মধ্যে অংশীদার হতে হলে, অবশ্যই মূলধন বা অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।

তো একটি ব্যবসা চলাকালীন অবস্থায় যখন আপনি সেই ব্যবসার মধ্যে বিনিয়োগ করবেন বা ইনভেস্ট করবেন। তখন চুক্তি পত্রের মাধ্যমে আপনি সেই ব্যবসার অংশীদার হতে পারবেন।

লাভ ক্ষতির বাটোয়ারঃ যখন আপনি একটি ব্যবসার মধ্যে অংশীদার হওয়ার সময় চুক্তি পত্রে স্বাক্ষর করবেন।

তখন অবশ্যই সেখানে উল্লেখ করা থাকবে যে, উক্ত ব্যবসা থেকে মোট লাভকৃত আয় থেকে আপনাকে কত পার্সেন্ট দেওয়া হবে।

এবং সেই চুক্তি পত্রের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক টা অংশীদারী ব্যক্তি কে তার প্রাপ্য লাভের অংশ প্রদান করতে হবে।

বিশ্বাসের ভিত্তিঃ শুধুমাত্র অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে নয়। বরং প্রত্যেক টি ব্যবসার মধ্যে বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আর যেহেতু অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। সেহেতু এখানে অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে। এবং সর্বদাই নিজের ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।

কিন্তু যদি বিশ্বাস না থাকে, তাহলে অংশীদারি ব্যবসায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হবে এটাই স্বাভাবিক।

দায়ঃ ব্যবসার ক্ষেত্রে যখন আপনি অংশীদার থাকবেন। তখন অবশ্যই আপনাকে লাভের পরিমাণ দেওয়া হবে।

কিন্তু যদি আপনার অংশীদার হওয়া ব্যবসা টি কোনো কারণে লস করে। কিংবা সেই ব্যবসার ক্ষতি হয়। তাহলে সেই ক্ষতির দায়ভারও আপনাকে নিতে হবে।

কেননা আপনি সেই ব্যবসার মধ্যে একজন অংশীদার।

রেজিস্ট্রেশন – আপনি অংশীদারি ব্যবসা করছেন নাকি ব্যক্তিগত ব্যবসা করছেন সেটা বড় কথা নয়। অবশ্যই আপনার ব্যবসায় অনুপাতে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

আর যখন আপনি অংশীদার হওয়া ব্যবসায় রেজিস্ট্রেশন করবেন। তখন অবশ্যই আপনার বিরুদ্ধে কোন আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ থাকবে না।

ব্যবসা খারিজ এর অধিকারঃ একটি অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের কলহ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে এটা স্বাভাবিক বিষয়।

যেহেতু একটি ব্যবসার মধ্যে অধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। তো সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যবসা গুলো বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

এবং একজন অংশীদারী ব্যক্তি সকল প্রকার নিয়ম অনুযায়ী তার অংশীদারিত্ব বাতিল করতে পারবে।

অংশীদারি ব্যবসায় কি সে বিষয় টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার পাশাপাশি। উপরে আমি আপনাকে অংশীদারি ব্যবসার বৈশিষ্ট্য গুলো কে জানিয়ে দিয়েছি।

মূলত একটি অংশীদারি ব্যবসার যে সকল বৈশিষ্ট্য থাকে। তার প্রত্যেক টি উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, অংশীদারি ব্যবসার সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি কি।

অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা

আমরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি, অংশীদারি ব্যবসায় কি। তো এবার আমি আপনাকে অংশীদারি ব্যবসা এর বেশ কিছু সুবিধা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

কারণ যখন আপনি কোন একটি ব্যবসার সাথে অংশীদারি এর চুক্তি করবেন। তখন আপনি বিশেষ কিছু সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

আর সেই সুবিধা গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয়। তাই চলুন, এবার স্বল্প আকারে জেনে নেওয়া যাক, অংশীদারি ব্যবসায় এর সুবিধা গুলো কি কি।

অধিক মূলধন লাভ করার সংস্থান

দেখুন, অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। সেক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হয়।

তা খুব সহজেই সেই অর্থ সংগ্রহ করা যায়। কারণ একটি ব্যবসা তৈরি করার ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির মূলধন সংগ্রহ করতে যে পরিমাণ কষ্ট হবে।

সেই মূলধন যদি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ২০ জন ব্যক্তির কাছে সংগ্রহ করা যায়।

তাহলে কিন্তু কোন একটি ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য মূলধন বা বিনিয়োগ নিয়ে আর কোন ধরনের সমস্যা থাকবে না।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুবিধা

একটি ব্যবসায় এর মধ্যে যখন আপনি একা পরিচালনা করবেন। তখন কিন্তু আপনাকে সকল সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অনেক সময় আপনি সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করতে পারেন।

কিন্তু একটি অংশীদারী ব্যবসায়ের মধ্যে এই সুযোগ টি থাকে না। কারণ এখানে একই সাথে অনেক ব্যক্তি যুক্ত থাকে।

এবং সবাই মিলে চিন্তা ভাবনা করে কোন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান টি পরিচালনা করার জন্য সর্বদাই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকে।

গঠনের ক্ষেত্রে সুবিধা

অংশীদারি ব্যবসায় এর ক্ষেত্রে শুরু করার সময় নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক নয়।

সে কারণে আপনি কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই একাধিক ব্যক্তি মিলে কোন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সূচনা করতে পারবেন। এবং যদি আপনাদের অংশীদারি থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে বিশ্বাস থাকে।

তাহলে কিন্তু উক্ত ব্যবসা থেকে আপনারা খুব সহজেই লাভবান হতে পারবেন। এবং পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন অনুসারে আপনি আপনাদের ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে পারবেন।

আপনার জন্য আরোও লেখা…

পরিচালনার দক্ষতা

একটি অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানুষের অংশীদারিত্ব থাকে। যার কারণে একেক জন একেক বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়।

এর ফলে কোন একটি ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই পরিচালনা করা যায়। কেননা উক্ত ব্যবসা টি পরিচালনা করার জন্য যে সকল সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।

তা সবাই মিলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়। আর এর ফলে উক্ত ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান টি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়।

ঋণ লাভের সুবিধা

সর্বদাই একটা কথা মাথা রাখবেন। যখন আপনি কোন সংস্থা বা কোন ধরনের ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করার জন্য আবেদন করবেন।

তখন তারা আপনার একটি বিষয় বিশেষ ভাবে যাচাই-বাছাই করে। সেটি হল, ঋণ নেওয়ার পরে আপনি সেই ঋণ ফেরত দিতে পারবেন কিনা।

যদি আপনি উক্ত ঋণের টাকা ফেরত দিতে সক্ষম থাকেন। তাহলে কিন্তু যে কোনো সংস্থা আপনাকে ঋণ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

আর যেহেতু অংশীদারী ব্যবসার মধ্যে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। সেহেতু এ ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার একটা সহজ পথ তৈরি হয়।

ঝুঁকি ভাগ করে নেওয়ার সুবিধা

আপনি যখন একা কোন একটি ব্যবসা পরিচালনা করবেন। তখন সেই ব্যবসার সকল আয় একাই ভোগ করতে পারবেন।

কিন্তু সেই ব্যবসার সকল ঝুঁকিও আপনাকে বহন করতে হবে। অপরদিকে অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে এই বিষয় টি লক্ষ্য করা যায় না।

কেননা এখানে একই সাথে অধিক ব্যক্তি অংশীদার হিসেবে থাকে। যার ফলে সেই ব্যবসা তে যদি কোন ধরনের ঝুঁকি থাকে।

তাহলে উক্ত ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকা সকল অংশীদার কে সেই ঝুঁকি ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হয়।

এর ফলে অংশীদারী ব্যবসা পরিচালনা করা আরও বেশি সহজ হয়ে যায়।

চুক্তির ক্ষেত্রে নমনীয়তা

একটি অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে যখন অধিক ব্যক্তি অংশীদারিত্ব গ্রহণ করবে। এবং সে সময় যে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে চুক্তি করবে।

পরবর্তী সময়ে সকল অংশীদারি ব্যক্তিরা সেই চুক্তির পরিবর্তন করতে পারবে। কেননা এখানে যে সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সেই সিদ্ধান্ত গুলো সবাই মিলে গ্রহণ করবে।

সে ক্ষেত্রে উক্ত চুক্তির মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে আসার জন্য কোন ধরনের ঝামেলা হবে না।

অংশীদারি ব্যবসায় এর অসুবিধা

আমরা উপরের আলোচনা থেকে অংশীদারি ব্যবসায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি। আমি আপনাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের সুবিধা গুলো জানিয়ে দিয়েছি।

তবে এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা থাকার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধা লক্ষণীয়। আর আপনি যখন অংশীদারি ব্যবসায় এর সাথে যুক্ত হতে যাবেন।

তখন অবশ্যই আপনাকে এই অংশীদারি ব্যবসায় এর অসুবিধা গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা অতি প্রয়োজনীয়।

আর সে কারণে এবার আমি আপনাকে অংশীদারি ব্যবসায় এর অসুবিধা গুলো জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

বিশ্বাসের অভাব

অধিকাংশ সময় অংশীদারি ব্যবসায় যে সমস্যা টি হয়। সেটি হল, বিশ্বাসের অভাব। কেননা এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে বিশ্বাস করাটা খুব কষ্টকর হয়ে যায়।

যদিও বা অংশীদারি ব্যক্তিরা সরাসরি ভাবে এই ধরনের ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে। তবুও এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো সত্তা না থাকার কারণে।

অধিকাংশ সময় অংশীদারীদের মনে উক্ত ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবিশ্বাস তৈরি হয়।

সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্বতা

যেহেতু অংশীদারি ব্যবসার মধ্যে থাকা সকল ব্যক্তিদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে ক্ষেত্রে একেক জন ব্যক্তি একেক রকম সিদ্ধান্ত নেয়।

যার ফলে কোন সিদ্ধান্ত টি গ্রহণ করতে হবে, আর কোনটি বর্জন করতে হবে সে গুলো নিয়ে বেশ বিলম্ব তৈরি হয়।

আর এর কারণে একটি অংশীদারি ব্যবসার নানা ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

যদি এমন ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে ব্যবসা থেকে মুনাফা অর্জন করা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়।

গোপনীয়তার ঘাটতি

এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকে। যার ফলে উক্ত ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য কোন ধরনের গোপন তথ্য থাকে না।

আর বলা যায় যে, অংশীদারি ব্যবসার ক্ষেত্রে অধিক পরিমাণ অংশীদারী ব্যক্তি যুক্ত থাকার কারণে। সেই ব্যবসার কোন কিছুই গোপন থাকে না। যার ফলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে।

অস্থায়ী অংশীদারিত্ব

পৃথিবীতে থাকা সকল মানুষের মনোভাব এক রকম নয়। ঠিক তেমনি ভাবে একটি ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকা অংশীদারী সকল ব্যক্তিদের চিন্তা-ভাবনা একই রকম হবে না।

আর সে কারণে বিভিন্ন ধরনের মতামত এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে একে অপরের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর ফলে এমন অনেক অংশীদারি ব্যক্তি থাকবেন।

যারা উক্ত ব্যবসা টি পরিচালনা করার মাঝ পথে গিয়ে হঠাৎ করেই তার অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেয়।

এর ফলে সেই সময়ে উক্ত ব্যবসা টি পরিচালনা করা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়।

মালিকানা হস্তান্তর করা যায় না

অংশীদারি ব্যবসার অন্যান্য অসুবিধা গুলোর মধ্যে। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার মালিকানা হস্তান্তর করা কঠিন।

কেননা যখন আপনার নিজস্ব একটি ব্যবসা থাকবে। তখন আপনি খুব সহজে আপনার ব্যবসা এর মালিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন।

কিন্তু অংশীদারী ব্যবসায় সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে। খুব সহজেই মালিকানা পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না।

অংশীদারি ব্যবসায়ের অপরিহার্য উপাদান গুলো কি কি?

অংশীদারি ব্যবসায় কি এতক্ষণের আলোচনা থেকে আমরা সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে গেছি।

তো এবার আমি আপনাকে জানিয়ে দিব, অংশীদারি ব্যবসায় এর অপরিহার্য উপাদান গুলো কি কি। অর্থাৎ কিভাবে একটি অংশীদারি ব্যবসা গঠিত হয় এবং তার জন্য কি কি উপাদান লাগে।

এবার আমি আপনাকে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক, অংশীদারি ব্যবসায় এর অপরিহার্য উপাদান গুলো সম্পর্কে।

  • পারস্পরিক সম্মতিঃ অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে যুক্ত থাকতে হলে অবশ্যই পারস্পরিক সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি উক্ত ব্যবসা টি পরিচালনা করছে তার সম্মতি থাকতে হবে।
  • এর পাশাপাশি আপনি একজন সদস্য হিসেবে আপনারও অংশীদারিত্ব নেয়ার ক্ষেত্রে সম্মতি থাকতে হবে। তবে যদি এই ধরনের সম্মতি না থাকার সত্বেও আপনাকে অংশীদারি করা হয়।
  • তাহলে কিন্তু তা অংশীদারি ব্যবসার আওতায় পড়বে না।
  • চুক্তিপত্রঃ অংশীদারি ব্যবসায় এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, চুক্তিপত্র। কারণ আপনার কাছে যদি কোন একটি ব্যবসার অংশীদার হিসেবে চুক্তিপত্র থাকে।
  • তাহলে আপনি তা প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনার কাছে কোন ধরনের চুক্তিপত্র না থাকে। তাহলে আপনার অংশীদারিত্বের কোন ধরনের প্রমাণ থাকবে না।
  • ইনভেস্ট বা বিনিয়োগঃ আপনি নিজে ব্যবসা শুরু করবেন নাকি অংশীদারি ব্যবসার সাথে যুক্ত হবেন সেটা বড় কথা নয়।
  • বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সব ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে ইনভেস্ট করতে হবে। আর কোন ব্যবসার মধ্যে যখন আপনি অংশীদারিত্ব নেয়ার জন্য চুক্তি করবেন।
  • তখন অবশ্যই আপনাকে সেই ব্যবসায় ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করতে হবে।

তো এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে। যে গুলোর সাহায্য অংশীদারি ব্যবসা গঠিত। তবে যে কয়েক টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

সেই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান গুলো নিয়ে উপরে আলোচনা করেছি। আশা করি, আপনি ধারণা নিতে পেরেছেন যে, অংশীদারি ব্যবসার প্রধান উপাদান গুলো কি কি।

অংশীদারি ব্যবসায় কত প্রকার?

যেহেতু আজকের আলোচনায় আমি আপনাকে অংশীদারি ব্যবসায় কি সে সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছি। সেহেতু আপনার একটা বিষয় জেনে রাখতে হবে।

সেটি হল, অংশীদারী ব্যবসা কে আবার কয়েক টি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। আর সেই অংশীদারি ব্যবসার প্রকারভেদ গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া টা আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয়।

তো অংশীদারি ব্যবসা কে প্রধানত দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সেগুলো হল, সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়, সীমিত অংশীদারি ব্যবসায়।

তবে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় কে আবার কয়েক টি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, বিশেষ অংশীদারি ব্যবসায় এবং ঐচ্ছিক অংশীদারি ব্যবসায়।

ব্যবসা নিয়ে আরোও লেখা…

এগুলো হলো অংশীদারি ব্যবসার প্রকারভেদ। আর আপনি এই আলোচনা থেকে অংশীদারি ব্যবসায় কি।

সে বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার পাশাপাশি। অংশীদারি ব্যবসায় কত প্রকার ও কি কি সে সম্পর্কেও জানতে পেরেছেন।

অংশীদারি ব্যবসায় নিয়ে আমাদের শেষ কথা

অংশীদারী ব্যবসা বলতে কি বুঝায়, আশা করি এবার আপনি সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন।

কেননা উপরের আলোচনা তে আমি আপনাদের খুব সহজ ভাবে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছি যে, অংশীদারি ব্যবসায় কি। এর পাশাপাশি এই ধরনের অংশীদারি ব্যবসার কি কি সুবিধা রয়েছে।

কি কি অসুবিধা রয়েছে, সে গুলো নিয়ে ধাপে ধাপে আলোচনা করেছি। এবং সবশেষে আমি আপনাদের জানিয়ে দিয়েছি, অংশীদারি ব্যবসার প্রধান উপাদান গুলো কি কি।

আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন অজানা তথ্য গুলো এই ওয়েবসাইটে শেয়ার করে থাকি। যদি আপনি ব্যবসা করতে চান কিংবা ইতিমধ্যে ব্যবসা করছেন।

তাহলে ব্যবসা করার নতুন নতুন টিপস গুলো সম্পর্কে জানতে হলে, আমাদের সাথে থাকার চেষ্টা করবেন।

আর ধন্যবাদ এতক্ষণ ধরে আমাদের অংশীদারি ব্যবসা নিয়ে লেখা আর্টিকেল টি পড়ার জন্য, আপনাকে জানাচ্ছি অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top